Dhaka 3:33 pm, Monday, 23 December 2024

টেকসই বাজার ব্যবস্থায় পথ দেখাচ্ছে এলডিডিপি প্রকল্প

দেশে কৃষিপণ্য উৎপাদনে রেকর্ডের কথা বলা হলেও বছরের বিভিন্ন সময়ে সেসব পণ্য আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়। বিশেষ করে মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবি করা হলেও এসব খাতের সংকট কাটছে না। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি তো বটেই, শীত, বর্ষা কিংবা গরমের কারণেও লোকসানের কথা বলে থাকেন ব্যবসায়ীরা। ফলে সাধারণ মানুষকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হয়। চাহিদা, উৎপাদন ও বাজারে পণ্যের জোগান সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকার কারণেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তারা মনে করেন, টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য গ্রহণযোগ্য তথ্যভান্ডার জরুরি। আর এ তথ্যভান্ডার একদিনে তৈরি করা সম্ভব হবে না। এর জন্য মাঠ থেকে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও পরিসংখ্যানে রূপান্তর পর্যন্ত একটি টেকসই বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা জরুরি।

আর এ কাজটিই করে দেখাচ্ছে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি এরই মধ্যে লাইভস্টক হাউসহোল্ড সার্ভে ২৪ ও ডিজিটাল ফিল্ড ডেটা মনিটরিং সিস্টেম (ডিএফডিএমএস) কার্যক্রম শেষ করেছে। এর মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ খাতে ভবিষ্যতে বড় সাফল্য আসবে বলে মনে করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

 

জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় প্রাণিসম্পদ খাতে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংকের দিকনির্দেশনায় এরই মধ্যে বাধ্যতামূলক খামার ও পশু নিবন্ধন; তথ্যভান্ডার তৈরি ও আইনগত ভিত্তি স্থাপন; প্রযুক্তিগত সহায়তা, খামার যান্ত্রিকীকরণ, উৎপাদন খরচ কমাতে পশুখাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিপণন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা; পশু রোগ-প্রতিরোধ শতভাগ গবাদিপশুকে রোগ-প্রতিরোধক টিকা উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন, টিকা প্রদান; সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সচেতনতার মাধ্যমে গবাদি পশুর অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ করছে। এ ছাড়া গবাদি পশুর জাত উন্নয়নে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমকে আরও যুগোপযোগী করতেও কাজ করছে প্রকল্পটি।

এদিকে ২০২৩ সালে অভ্যন্তরীণ বাজারে আলু, পেঁয়াজ, মুরগি, মাছ, গরু ও খাসির মাংসের দাম ব্যাপক হারে বাড়ছে। এর মধ্যে সবকটিই দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন হচ্ছে। তবে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে বলে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে দাবি করা হচ্ছে। অন্যদিকে খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, অফিসে বসে মাঠ তথ্য সংগ্রহ করার কারণে কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতের সঠিক তথ্য ও পরিসংখ্যান উঠে আসছে না। এজন্য বাজারে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।

 

প্রাপ্ত তথ্যমতে, চাহিদার চেয়ে প্রতিদিন দেশে ৫০ লাখ পিস ডিম বেশি ডিম উৎপাদন হয়। অন্যদিকে বার্ষিক চাহিদার চেয়ে আলুর উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ লাখ টন বেশি। আর পেঁয়াজের উৎপাদন ১০ লাখ টনের বেশি। এ ছাড়া এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর সর্বোচ্চ সম্ভাব্য চাহিদা ১ কোটি ৭ লাখ ২ হাজার ৩৯৪টি। সারা দেশে কোরবানিযোগ্য ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি পশু প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান। ফলে দেখা যাচ্ছে, চাহিদার তুলনায় কোরবানি যোগ্য পশুর উদ্বৃত্ত রয়েছে।

সরকারি তথ্যর বিষয়ে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘যে কোনো খাতের তথ্যভান্ডার থাকা প্রয়োজন। আমাদের এখানে তথ্য তৈরি হচ্ছে, কিন্তু তথ্য তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্নে আছে। কয়েক বছর থেকে কোরবানির আগে একটা সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে কোরবানির চাহিদা ও পশুর মজুতের তথ্য দেওয়া হয়। এবারও যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে খামারিরা লোকসানে পড়বেন। বলা হচ্ছে চাহিদার তুলনায় লাখ লাখ পশু অতিরিক্ত রয়েছে। তাতে ক্রেতারা আগ্রহ কম দেখাবেন।’

প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘উনারা যে তথ্য দিয়েছেন, সেটি সত্য হলে বাজারে মাংসের দাম কমে না কেন? আর পশু খাদ্যের দামের কারণে মাংসের দাম বেড়ে থাকলে পশু খাদ্যের দাম কমানো হয় না কেন?’

এলডিডিপি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিনটি পার্বত্য জেলা ছাড়া ৬১ জেলার ৪৬৬টি উপজেলায় হাউসহোল্ড সার্ভে (খানা গণনা) করে খামারি ও প্রাণীর হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। চলতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য প্রকাশ করার পরিকল্প করছে সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে সংগৃহীত তথ্য সুরক্ষায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। যেখানে পরবর্তী সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য হালনাগত করা যাবে। যার মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের সঠিক তথ্য সবার সামনে উন্মুক্ত থাকবে।

কৃষি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কালবেলাকে বলেন,

‘বাজারে যখন দাম না কমে বাড়তে থাকে, আর মানুষের চাহিদার তুলনায় ভোগ কম থাকে, তখন বুঝতে হবে তথ্যের সমস্যা আছে। যেজন্য তথ্যের বিভ্রান্তি দূর করা জরুরি। সরকারের তথ্যের সঙ্গে মাঠ তথ্যের মিল না থাকলে খামারিরা লোকসানে পড়বেন। সেজন্য মাঠ তথ্যের সরবরাহ গড়ে তুলতে হবে এবং জনগণ যাতে তথ্যকে সঠিক হিসেবে গ্রহণ করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদন পদ্ধতিকে দক্ষ করতে হবে। কারণ দক্ষতায় উৎপাদন খরচ কমবে এবং খরচ কমলে উদ্যোক্তা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।’

সার্বিক বিষয়ে এলডিডিপি প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে চাই গ্রহণযোগ্য ডাটাবেজ। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার দেশের প্রকল্প এলাকার সব খামার, খামারি, খামারের পশু সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করছে। খামার নিবন্ধন ও পশু শনাক্তকরণ কার্যক্রমও গ্রহণ করেছে। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর খামার, খামারি ও পশুর বিস্তারিত ডাটাবেজ তৈরির ভিত্তি রচিত করবে। এসব ডাটাবেজ উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, গবেষণা, ব্যবসা পরিকল্পনা, ইনস্যুরেন্স ইত্যাদি বহুবিধ সুবিধার ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে।’

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

টেকসই বাজার ব্যবস্থায় পথ দেখাচ্ছে এলডিডিপি প্রকল্প

আপলোড সময় : 07:38:04 pm, Thursday, 23 May 2024

দেশে কৃষিপণ্য উৎপাদনে রেকর্ডের কথা বলা হলেও বছরের বিভিন্ন সময়ে সেসব পণ্য আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়। বিশেষ করে মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবি করা হলেও এসব খাতের সংকট কাটছে না। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি তো বটেই, শীত, বর্ষা কিংবা গরমের কারণেও লোকসানের কথা বলে থাকেন ব্যবসায়ীরা। ফলে সাধারণ মানুষকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হয়। চাহিদা, উৎপাদন ও বাজারে পণ্যের জোগান সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকার কারণেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তারা মনে করেন, টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য গ্রহণযোগ্য তথ্যভান্ডার জরুরি। আর এ তথ্যভান্ডার একদিনে তৈরি করা সম্ভব হবে না। এর জন্য মাঠ থেকে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও পরিসংখ্যানে রূপান্তর পর্যন্ত একটি টেকসই বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা জরুরি।

আর এ কাজটিই করে দেখাচ্ছে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি এরই মধ্যে লাইভস্টক হাউসহোল্ড সার্ভে ২৪ ও ডিজিটাল ফিল্ড ডেটা মনিটরিং সিস্টেম (ডিএফডিএমএস) কার্যক্রম শেষ করেছে। এর মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ খাতে ভবিষ্যতে বড় সাফল্য আসবে বলে মনে করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

 

জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় প্রাণিসম্পদ খাতে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংকের দিকনির্দেশনায় এরই মধ্যে বাধ্যতামূলক খামার ও পশু নিবন্ধন; তথ্যভান্ডার তৈরি ও আইনগত ভিত্তি স্থাপন; প্রযুক্তিগত সহায়তা, খামার যান্ত্রিকীকরণ, উৎপাদন খরচ কমাতে পশুখাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিপণন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা; পশু রোগ-প্রতিরোধ শতভাগ গবাদিপশুকে রোগ-প্রতিরোধক টিকা উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন, টিকা প্রদান; সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সচেতনতার মাধ্যমে গবাদি পশুর অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ করছে। এ ছাড়া গবাদি পশুর জাত উন্নয়নে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমকে আরও যুগোপযোগী করতেও কাজ করছে প্রকল্পটি।

এদিকে ২০২৩ সালে অভ্যন্তরীণ বাজারে আলু, পেঁয়াজ, মুরগি, মাছ, গরু ও খাসির মাংসের দাম ব্যাপক হারে বাড়ছে। এর মধ্যে সবকটিই দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন হচ্ছে। তবে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে বলে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে দাবি করা হচ্ছে। অন্যদিকে খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, অফিসে বসে মাঠ তথ্য সংগ্রহ করার কারণে কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতের সঠিক তথ্য ও পরিসংখ্যান উঠে আসছে না। এজন্য বাজারে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।

 

প্রাপ্ত তথ্যমতে, চাহিদার চেয়ে প্রতিদিন দেশে ৫০ লাখ পিস ডিম বেশি ডিম উৎপাদন হয়। অন্যদিকে বার্ষিক চাহিদার চেয়ে আলুর উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ লাখ টন বেশি। আর পেঁয়াজের উৎপাদন ১০ লাখ টনের বেশি। এ ছাড়া এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর সর্বোচ্চ সম্ভাব্য চাহিদা ১ কোটি ৭ লাখ ২ হাজার ৩৯৪টি। সারা দেশে কোরবানিযোগ্য ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি পশু প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান। ফলে দেখা যাচ্ছে, চাহিদার তুলনায় কোরবানি যোগ্য পশুর উদ্বৃত্ত রয়েছে।

সরকারি তথ্যর বিষয়ে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘যে কোনো খাতের তথ্যভান্ডার থাকা প্রয়োজন। আমাদের এখানে তথ্য তৈরি হচ্ছে, কিন্তু তথ্য তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্নে আছে। কয়েক বছর থেকে কোরবানির আগে একটা সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে কোরবানির চাহিদা ও পশুর মজুতের তথ্য দেওয়া হয়। এবারও যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে খামারিরা লোকসানে পড়বেন। বলা হচ্ছে চাহিদার তুলনায় লাখ লাখ পশু অতিরিক্ত রয়েছে। তাতে ক্রেতারা আগ্রহ কম দেখাবেন।’

প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘উনারা যে তথ্য দিয়েছেন, সেটি সত্য হলে বাজারে মাংসের দাম কমে না কেন? আর পশু খাদ্যের দামের কারণে মাংসের দাম বেড়ে থাকলে পশু খাদ্যের দাম কমানো হয় না কেন?’

এলডিডিপি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিনটি পার্বত্য জেলা ছাড়া ৬১ জেলার ৪৬৬টি উপজেলায় হাউসহোল্ড সার্ভে (খানা গণনা) করে খামারি ও প্রাণীর হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। চলতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য প্রকাশ করার পরিকল্প করছে সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে সংগৃহীত তথ্য সুরক্ষায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। যেখানে পরবর্তী সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য হালনাগত করা যাবে। যার মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের সঠিক তথ্য সবার সামনে উন্মুক্ত থাকবে।

কৃষি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কালবেলাকে বলেন,

‘বাজারে যখন দাম না কমে বাড়তে থাকে, আর মানুষের চাহিদার তুলনায় ভোগ কম থাকে, তখন বুঝতে হবে তথ্যের সমস্যা আছে। যেজন্য তথ্যের বিভ্রান্তি দূর করা জরুরি। সরকারের তথ্যের সঙ্গে মাঠ তথ্যের মিল না থাকলে খামারিরা লোকসানে পড়বেন। সেজন্য মাঠ তথ্যের সরবরাহ গড়ে তুলতে হবে এবং জনগণ যাতে তথ্যকে সঠিক হিসেবে গ্রহণ করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদন পদ্ধতিকে দক্ষ করতে হবে। কারণ দক্ষতায় উৎপাদন খরচ কমবে এবং খরচ কমলে উদ্যোক্তা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।’

সার্বিক বিষয়ে এলডিডিপি প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে চাই গ্রহণযোগ্য ডাটাবেজ। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার দেশের প্রকল্প এলাকার সব খামার, খামারি, খামারের পশু সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করছে। খামার নিবন্ধন ও পশু শনাক্তকরণ কার্যক্রমও গ্রহণ করেছে। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর খামার, খামারি ও পশুর বিস্তারিত ডাটাবেজ তৈরির ভিত্তি রচিত করবে। এসব ডাটাবেজ উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, গবেষণা, ব্যবসা পরিকল্পনা, ইনস্যুরেন্স ইত্যাদি বহুবিধ সুবিধার ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে।’