Dhaka 6:02 pm, Saturday, 21 December 2024
বেকিং নিউজ :
Logo দাউদকান্দির বারোপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে আওয়ামীলীগ পন্থী সদস্য সচিব, নেতাকর্মীদের তীব্র ক্ষোভ Logo ভিক্টোরিয়া কলেজ রোভার স্কাউটের ৫০ বছর উদযাপন Logo সংবিধান দিয়ে ফ্যাস্টিট হাসিনা দেশের মানুষকে হত্যা করেছে:ইসহাক খন্দকার Logo সোনাইমুড়ীতে হোসেনপুর ফাতেমা (রা.) মহিলা মাদরাসার উদ্বোধন Logo মোহনপুরে ২০ বছর পরে আগামীকাল উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল Logo নাটোরে মহাশ্মশানে ডাকাতি, মন্দিরে লুটপাট ও খুন Logo রাজশাহী তানোরে দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতারণায় প্রথম স্ত্রী নিঃস্ব Logo সাজাভোগ শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরল ১৫ বাংলাদেশি নারী-শিশু Logo হোমনাকে জেলা ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ Logo Kometa Casino Live Casino 💰 Get 200% up to INR 10 000 INR 💰 180 Free Spins

ছাব্বিশে পাতাল রেল যুগে বাংলাদেশ

রাজধানীর যানজট প্রবণ অন্যতম সড়ক হলো বিমানবন্দর থেকে রামপুরা হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত। সরু রাস্তা, অতিরিক্ত যানবাহনসহ নানা কারণে এই পথ পাড়ি দিতে কত সময় লাগতে পারে—তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। এমন বাস্তবতায় নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে এই পথে পাতাল রেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্য দিয়ে পাতাল রেল যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় এই রেল নির্মাণ হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে বাসে বিমানবন্দর-কমলাপুর যেতে গড়ে সময় লাগে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা। পাতাল রেল চালু হলে সময় লাগবে মাত্র ২৪ মিনিট। গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১টি স্টেশন বিশিষ্ট ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে তিন ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো পাতালে নির্মাণকাজের সময় আশপাশের ভবন ও টানেল দেবে যাওয়া, ট্রাফিক সমস্যা, মাটি ব্যবস্থাপনাসহ বর্ষায় পাতালে পানি বেড়ে যাওয়া।

সব চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই এমআরটি-১ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি যথাসময়ে শেষ হবে। কাজ শেষে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যাত্রীদের যুগ-যুগের যানজটের ভোগান্তি শেষ হবে।

কর্মকর্তারা জানান, মূলত ১২টি প্যাকেজে নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে ১১টি প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়াধীন। তিনটি প্যাকেজের টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এটিও উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলাচলকারী মেট্রোরেলের আদলে বিদ্যুতে চলবে। নিয়ন্ত্রণ করা যাবে দূর থেকেই।

এই লাইনে প্রথমে আট কোচ বিশিষ্ট ২৫ সেট ট্রেন দিয়ে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে। ভবিষ্যতে ৩৬ সেট ট্রেন চালানো হবে। প্রতিটি ট্রেনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৮ জন যাত্রী পরিবহন করা যাবে। বিমানবন্দর-কমলাপুর রুট হবে পাতাল ও পূর্বাচল অংশ হবে উড়াল।

এমআরটি লাইন-১-এ ১২টি ভূ-গর্ভস্থ স্টেশনে বিরতিসহ ট্রেনে করে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। অন্যদিকে ৯টি স্টেশনে বিরতিসহ নতুন বাজার-পূর্বাচল টার্মিনাল যেতে সময় লাগবে ২০ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। এ ছাড়া নতুন বাজার ইন্টারচেঞ্জের মাধ্যমে ১৬টি স্টেশনে বিরতিসহ পূর্বাচল থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে মাত্র ৩৫ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। পাতাল অংশে ঘণ্টায় ট্রেন চলবে ৯০ কিলোমিটার ও উড়াল অংশে চলবে শত কিলোমিটার গতিতে।

এই পাতাল রেল নির্মাণে ব্যয় হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। জাপানি ঋণ ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

দ্বিতীয় মেট্রোরেল হবে উড়াল ও পাতাল পথের সমন্বয়ে। এর মধ্যে বিমানবন্দর-কমলাপুর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার পাতাল রেলে থাকছে ১২টি স্টেশন। এগুলো হচ্ছে বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, নদ্দা, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, আফতাব নগর, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর। আর পূর্বাচল রুটের নতুন বাজার ও নদ্দা দুটি স্টেশন বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে পাতালে হবে। এরপর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথ। এ রুটে ৯টি স্টেশন হলো নতুন বাজার, নদ্দা, জোয়ারসাহারা, বোয়ালিয়া, মস্তুল, শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

দাউদকান্দির বারোপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে আওয়ামীলীগ পন্থী সদস্য সচিব, নেতাকর্মীদের তীব্র ক্ষোভ

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ছাব্বিশে পাতাল রেল যুগে বাংলাদেশ

আপলোড সময় : 08:05:32 pm, Thursday, 29 February 2024

রাজধানীর যানজট প্রবণ অন্যতম সড়ক হলো বিমানবন্দর থেকে রামপুরা হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত। সরু রাস্তা, অতিরিক্ত যানবাহনসহ নানা কারণে এই পথ পাড়ি দিতে কত সময় লাগতে পারে—তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। এমন বাস্তবতায় নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে এই পথে পাতাল রেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্য দিয়ে পাতাল রেল যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় এই রেল নির্মাণ হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে বাসে বিমানবন্দর-কমলাপুর যেতে গড়ে সময় লাগে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা। পাতাল রেল চালু হলে সময় লাগবে মাত্র ২৪ মিনিট। গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১টি স্টেশন বিশিষ্ট ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে তিন ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো পাতালে নির্মাণকাজের সময় আশপাশের ভবন ও টানেল দেবে যাওয়া, ট্রাফিক সমস্যা, মাটি ব্যবস্থাপনাসহ বর্ষায় পাতালে পানি বেড়ে যাওয়া।

সব চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই এমআরটি-১ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি যথাসময়ে শেষ হবে। কাজ শেষে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যাত্রীদের যুগ-যুগের যানজটের ভোগান্তি শেষ হবে।

কর্মকর্তারা জানান, মূলত ১২টি প্যাকেজে নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে ১১টি প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়াধীন। তিনটি প্যাকেজের টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এটিও উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলাচলকারী মেট্রোরেলের আদলে বিদ্যুতে চলবে। নিয়ন্ত্রণ করা যাবে দূর থেকেই।

এই লাইনে প্রথমে আট কোচ বিশিষ্ট ২৫ সেট ট্রেন দিয়ে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে। ভবিষ্যতে ৩৬ সেট ট্রেন চালানো হবে। প্রতিটি ট্রেনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৮ জন যাত্রী পরিবহন করা যাবে। বিমানবন্দর-কমলাপুর রুট হবে পাতাল ও পূর্বাচল অংশ হবে উড়াল।

এমআরটি লাইন-১-এ ১২টি ভূ-গর্ভস্থ স্টেশনে বিরতিসহ ট্রেনে করে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। অন্যদিকে ৯টি স্টেশনে বিরতিসহ নতুন বাজার-পূর্বাচল টার্মিনাল যেতে সময় লাগবে ২০ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। এ ছাড়া নতুন বাজার ইন্টারচেঞ্জের মাধ্যমে ১৬টি স্টেশনে বিরতিসহ পূর্বাচল থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে মাত্র ৩৫ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। পাতাল অংশে ঘণ্টায় ট্রেন চলবে ৯০ কিলোমিটার ও উড়াল অংশে চলবে শত কিলোমিটার গতিতে।

এই পাতাল রেল নির্মাণে ব্যয় হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। জাপানি ঋণ ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

দ্বিতীয় মেট্রোরেল হবে উড়াল ও পাতাল পথের সমন্বয়ে। এর মধ্যে বিমানবন্দর-কমলাপুর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার পাতাল রেলে থাকছে ১২টি স্টেশন। এগুলো হচ্ছে বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, নদ্দা, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, আফতাব নগর, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর। আর পূর্বাচল রুটের নতুন বাজার ও নদ্দা দুটি স্টেশন বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে পাতালে হবে। এরপর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথ। এ রুটে ৯টি স্টেশন হলো নতুন বাজার, নদ্দা, জোয়ারসাহারা, বোয়ালিয়া, মস্তুল, শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল।