সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ইউনিয়নে নতুন গ্যাস কূপের সন্ধান মিলেছে। রবিবার (৯ জুন) বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্সে)-এর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ইউনিয়নের নতুন ভাঙা (আনফরের ভাঙ্গা) নামক এলাকায় রাস্তার পাশে চার পাঁচ দিন ধরেই মাটির নিচ থেকে গ্যাস বের হচ্ছে, এমন দৃশ্য দেখতে পায় স্থানীয় জনতা।
এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি বন্যার পানি নামতে শুরু করার পর গত ৩-৪ দিন ধরে গোয়াইনঘাটের আনফরের ভাঙ্গা নামক এলাকায় রাস্তার পাশের একটি জায়গায় পানির নিচ থেকে বুদবুদ উঠতে শুরু করে। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে কয়েকজন সেই স্থানে গ্যাস লাইটার থেকে আগুন জ্বালালে পানিতে আগুন ধরে যায়। এরপর সেখানে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে চাউর হয় এবং বিষয়টি দেখতে উৎসুক জনতা প্রতিদিন ভিড় করতে থাকেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই সংবাদ গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলামের নজরে আসে। শনিবার (৮ জুন) দুপুর ২টায় তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্সে) কে জানান।
রবিবার দুপুর আড়াইটায় বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের ব্যবস্থাপক ও টিম প্রধান এস. এম. নাফিফুন আরফিন ঘটনাস্থল সরজমিনে পরিদর্শন করে গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করেন। সেইসময় উপস্থিত ছিলেন বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের সহকারী ব্যাবস্থাপক মুহিত আলম। সিলেট গ্যাসফিল্ডের সহকারী ব্যাবস্থাপক শুভংকর সরকার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তোয়াকুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ সহকারী কর্মকর্তা হুসাইন মাহমুদ সজীব।
এ বিষয়ে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের সহকারী ব্যবস্থাপক শুভংকর সরকার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমাদের টিম পরিদর্শন করেছেন। শনিবার গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরজমিন পরিদর্শন করেছেন। বায়ুজিন না ন্যাচারাল গ্যাস তা বুঝা যাচ্ছে না। অপাতত ওই স্থান মাটি চাপা দিয়ে রেড জোন হিসেবে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। জনসাধারণকে দূরত্বে রাখতে ১৩ নং বিছনাকান্দি ইউনিয়ন ইউপির (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বাপেক্সের প্রতিনিধি টিম পরিদর্শন শেষে গ্যাসের স্যাম্পল সংগ্রহ করেছেন। পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যাবে গ্যাসের বিষয়টি বায়ুজনিক, ন্যাচারাল না থার্মোজনিক।
এ বিষয়ে বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের ব্যবস্থাপক ও টিম প্রধান এস. এম. নাফিফুন আরফিন প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গোয়াইনঘাট ইউএনও যথাসময়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করায় আমাদের টিম ঘটনাস্থলে খুব দ্রুত চলে এসেছি। বাপেক্সের ল্যাবে পরীক্ষার জন্য তিন বোতল গ্যাসের নমুনা সংগ্রহে নিয়েছি। তাছাড়া এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। ব্রিজ নির্মাণে কয়েক জায়গায় ফাইলিং করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এই জায়গায় ফাইলিংয়ের সময় গ্যাসের আলামত পেয়েছেন বলে তাকে জানিয়েছেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। গ্যাসের নমুনা পরীক্ষা করার পর এখানে সব ধরনের সার্ভে করা হবে।তার আগে গ্যাসের নমুনা বাপেক্সের ল্যাবে পরীক্ষা করলেই জানা যাবে গ্যাসের ধরন বায়ুজনিক না থার্মোজনিক। গ্যাসের অরিজিনটা বুঝার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। গ্যাসের প্রেসার ভালো আছে, এখানে পজেটিভ কিছু একটা হলে দেশ ও জাতির জন্য ভালো কিছু হবে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।