দক্ষিণ চট্টগ্রামের পুরনো প্রবেশদ্বার কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত শতবর্ষী পুরাতন কালুরঘাট সেতুতে পুনরায় মেরামতের পর আবারো খুলে দেওয়া হয়েছে পথচারীদের জন্য। তবে এ প্রথম বারের মতো সেতুটিতে পথচারীদের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মান করা হয়েছে। যা বর্তমানে দৃশ্যমান ও দৃষ্টি নন্দন হওয়ায় পথচারী আর ভ্রমন পিপাসুদের আনাগোনা বাড়তে দেখা গেছে। প্রথমবারের মতো সেতুটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে নির্মিত ওয়াকওয়ের কাজও শেষ হয়েছে। ইতো মধ্যে কর্ণফুলী নদীর উভয় পারের মানুষ চলাচল শুরু করেছে। এখন সেতুর ওপর ট্রেন এবং যানবাহন চলাচলের সময় পাশের ওয়াকওয়ে দিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন পথচারীরা।
এখন শুধু বাকি রইল সড়ক। সড়ক পথ নিয়েও আর বেশি দিন অপেক্ষায় থাকতে হবে না বলে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু জাফর মিঞা।
তিনি আরো বলেন, বুয়েটের পরামর্শে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণের কাজটি শেষ করলাম। ইতিমধ্যে মানুষের চলাচলের জন্য তা খুলে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থীও তা উপভোগ করতে যান।
এদিকে, শনিবার থেকে সেতুটির ওয়াকওয়ে পুরোদমে খুলে দেওয়ার পর থেকেই মানুষের পাশাপাশি মোটরসাইকেল চলাচলের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে রবিবার সকালে।
জানা যায়, বুয়েট প্রকৌশলীদের পরামর্শে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হচ্ছে প্রাচীন কালুরঘাট সেতু। সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে গত ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেন চলাচল শুরু হলেও যানবাহন ও পথচারী চলাচলের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে লেগে যায় অনেক সময়।
এ সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচলের পথ থাকায় রেল ট্র্যাকের অভ্যন্তরে পানি জমে পাত ক্ষতিগ্রস্ত হতো। তবে এবার বিদ্যমান পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ রাখা হয়েছে। এরপর ওই কংক্রিট ঢালাইয়ের ওপর পিচ দিয়ে সড়কপথ নির্মাণ করা হয়। এতে সড়ক ও রেলপথ উভয়ই আগের চেয়ে হয়েছে অনেক শক্তিশালী।
অপরদিকে, দীর্ঘদিন পর হলেও হাঁটার জন্য প্রথমবারের মত ওয়াকওয়ে চালু হওয়ায় খুশি সাধারন মানুষ। স্হানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ওয়াকওয়ে চালু হওয়ায় আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। তবে, দ্রুত গাড়ি চলাচল শুরু হলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরুর আগে বড় মাথা ব্যথার কারণ ছিল শতবর্ষী জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু। গত ৫ নভেম্বর কক্সবাজারের পথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। দফায় দফায় ঘোষণা দেয়ার পরও দশ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সেতুটিতে যান চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হয়নি। ফেরি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এপার থেকে ওপারে চলাচল করতে হচ্ছে। সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু না হওয়ায় অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লাখো মানুষের।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম বলেন, কালুরঘাট সেতুর ওয়াকওয়ে খুলে দেয়া হয়েছে। কারিগরী দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগামী জুলাইয়ের শেষে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় কালুরঘাট রেলসেতু।