শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার ওমান। প্রথম অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে ১২ ক্যাটাগরিতে দক্ষ কর্মী নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছে দেশটি। পাশাপাশি দেশটিতে থাকা ৯৬ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীকে বৈধতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ওমান সরকার।
এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ ঘোষণা করে ওমান। মূলত ভিসার অপব্যবহার ও চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণ কর্মী থাকার অভিযোগ দেখিয়ে সিদ্ধান্তটি নিয়েছিল ওমান সরকার। সেই থেকে বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ রয়েছে ওমানের শ্রমবাজার।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ মে ওমানের শ্রম মন্ত্রী ডা. মাহাদ বিন সাইদ বিন আলী বাওইনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। বৈঠকে বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি জানান ওমানের শ্রমমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশিদের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভিসা দেওয়া হবে। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অন্যদিকে ওমানে অবস্থিত বিভিন্ন কোম্পানির বৈদেশিক নিয়োগ কর্তারাও বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ১২ ক্যাটাগরিতে লোক নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ওমান। তারা দক্ষ কর্মী নিতে চায়। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। দক্ষ কর্মী যাওয়া শুরু করলে অদক্ষ কর্মীও যাওয়া শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে সে ব্যবস্থা হবে।’
এ দিকে জানা গেছে, বর্তমানে ওমানে ৯৬ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছেন। তাঁদের বৈধতা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে দেশটি। নিয়ম অনুযায়ী, বৈধ হতে প্রতি কর্মীকে মাসে ৪০ রিয়াল বা ১২ হাজার টাকা করে মাশুল দিতে হবে। সে হিসাবে কোনো কর্মী ৫ বছর থাকতে চাইলে তাঁকে বছরে ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা করে মোট ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা মাশুল দিতে হবে। অবৈধ ৯৬ হাজার কর্মীকে বছরে পরিশোধ করতে হবে ১৩ হাজার ৮২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
ওমানে অবৈধভাবে অবস্থান করা কর্মী প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘অবৈধভাবে থাকা ৯৬ হাজার কর্মীকে বৈধ করার আশ্বাস দিয়েছে ওমান সরকার। নিয়ম অনুযায়ী বৈধ করতে জরিমানা দিতে হয়। সাম্প্রতিক সফরে এই জরিমানা মওকুফ করতে আমরা ওমান সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছি। তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।’
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে মূলত দক্ষ কর্মী নিতে আগ্রহী ওমানের নিয়োগকর্তারা। মাধ্যম হিসেবে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি, একমাত্র সরকারি মালিকানাধীন জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল, এমনকি সরাসরি প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মী নিতে চায় তারা।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শুধু ওমান নয়; বৈদেশিক শ্রমবাজারের বৈশ্বিক ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দক্ষ ও যোগ্য কর্মী তৈরিতে কাজ করছে সরকার। এ জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিতে বিনিয়োগ বাড়ানো হচ্ছে।’
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্রে জানা গেছে, বন্ধ হওয়ার আগেই ভিসা পেয়েছিলেন এমন ৩০২ কর্মী ওমানে যান এ বছরের জানুয়ারি মাসে। এরপর আর নতুন কোনো কর্মী দেশটিতে যেতে পারেননি। এর আগে গত বছর (২০২৩) ওমানে যান নতুন ১ লাখ ২৭ হাজার ৮৮৩ জন। আর ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬১২ জন।
প্রকাশক : মাসুদ রানা সুইট । সম্পাদক : আবুল হাসনাত অমি । নগর সম্পাদক : ইফতেখার আলম বিশাল নির্বাহী সম্পাদক : রুবেল আহম্মেদ । মফস্বল সম্পাদক : মোস্তাফিজুর রহমান । ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নীলা সুলতানা । বার্তা সম্পাদক : -------------- । সহ-বার্তা সম্পাদক : আলিফ বিন রেজা । সহ-বার্তা সম্পাদক :
Copyright © 2024 Dainiksopnerbangladesh.com. All rights reserved.