কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নাফিস আহমেদ তুষার (২৮) নামে এক জাসদ ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
এর আগে রাত ৮টার দিকে উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর বাজারে দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
তুষার মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদ ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক। নিহতের পিতা রবিউল ইসলাম রবি ওই ইউনিয়ন জাসদের সভাপতি।
স্থানীয়রা জানান, রাত আটটার দিকে নাইফ আহমেদ তুষার গোলাপনগর বাজারের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এসময় ১২ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল চায়ের দোকানে সামনে এসে দাঁড়ায়।
প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জনের একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেল থেকে নেমেই তুষারকে চায়ের দোকানের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে।
এক পর্যায়ে তুষার দৌঁড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে বাজারের মধ্য প্রকাশ্যে তারা আবারও কুপাতে থাকে। এসময় স্থানীয়রা ছুটে আসলে রাস্তায় ফেলে রেখে দুর্বৃত্তরা চলে যায়।
এতে তুষারের পায়ে, হাতে, বুকে ও মাথাসহ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে রামদার আঘাতে মারাত্মক যখম হয়। পরে স্থানীয়রা আহত তুাষারকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তুষারের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নাইফ আহমেদ তুষার মারা যান।
তুষার ঢাকার একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ১৭ রোজায় ছুটিতে সে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন।
ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজাউল করিম বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত ঐ যুবকের দুই পায়ের রগ কেটে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাছাড়া পিঠে একাধিক গভীর ক্ষতের চিহৃ ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রাজশাহীতে রেফার্ড করা হয়েছিল।
এদিকে জাসদ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ বেনু বলেন, ‘জানতে পেরেছি, হামলাকারীরা ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাজাহান আলীর ফকিরাবাদ বাসভবনে ইফতার মাহফিল থেকে এসে হামলা চালিয়ে আবার সেখানেই ফিরে যায়।’
তবে এ ঘটনায় শাজাহান আলীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, হত্যার সাথে জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।