যুগে যুগে অন্ধকার দূরে সরিয়ে আলোর পথে এগিয়ে নিতে জন্মান কিছু মানুষ। তাদের মধ্যে অন্যতম নার্সরা। একজন রোগীকে সুস্থ করতে চিকিৎসকের পাশে থেকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে সেবা দিয়ে যান তারা।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারী কাউন্সিল হতে সকল ক্যাডারদের প্রত্যাহার পূর্বক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্ট্রার পদে যোগ্য নার্স ও অভিজ্ঞ নার্স পদায়নের ১দফা দাবীতে কর্মবিরতি পালন করছে কুমিল্লার সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নার্সবৃন্দ।
বুধবার (০৯অক্টোবর) সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নার্সিং ও মিডওয়াইফারী সংস্কার পরিষদের আয়োজনে হাসপাতালের মূল ফটকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫ঘন্টা নার্সদের কর্মবিরতি পালনসহ স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছে।
কর্মবিরতি পালন কালে নার্সরা দাবী করেন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরে মহাপরিচালকসহ সকল পদে যোগ্য নার্সদের পদায়ন করতে হবে। ২০১৬ সালের নিয়োগ বিধি মোতাবেক নার্সদের পাঁচ বছর পরপর পদোন্নতি দেওয়ার কথা থাকলেও আমলা তান্ত্রিক জটিলতার কারণে কৌশলগতভাবে তাদেরকে পদোন্নতি দিচ্ছেনা। তাদেরকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করছে। নার্সরা ন্যায্য অধিকার পাচ্ছেনা। এখন তাঁরা তাদের ন্যায্য অধিকার চায়।
মহাপরিচালকসহ অধিদপ্তরে যতগুলো পদ রয়েছে সকল পদে নার্সদেরকে পদোন্নতি দিতে হবে। নিজ বেতনে কিংবা অতিরিক্ত দায়িত্বে নয় তারা চাচ্ছে পদোন্নতি। মহাপরিচালক পদে নার্সদের পদায়ন করতে হবে।
কর্মবিরতিতে আরো দাবী করেন, তাদের যথেষ্ট যোগ্য নার্স রয়েছে। দেশ এবং দেশের বাহির থেকে সরকারি অর্থায়নে তাদের পিএইচডি সম্পন্ন নার্স আছে, এমএসসি সম্পন্ন নার্স আছে, এমপিএইচ সম্পন্ন নার্স আছে। তাই নার্সদের মধ্য থেকে যোগ্য নার্সদের যোগ্য স্থানে যেন পদায়ন করা হয়। আর কোন টালবাহানা তারা চান না। তাদেরকে কোন মৌখিকভাবে আশান্বিত করলে চলবে না। তাদেরকে দীর্ঘ নয় বছর বিভিন্ন আশ্বাস দিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। তারা আর নিরাশার আগুনে পুড়তে চাননা।তারা আর শুভংকরের ফাঁকিতে বিশ্বাসী না। তারা শুভঙ্করের ফাঁকি বুজে গেছে। তাই এখন তারা চাচ্ছে যোগ্য নার্সদের যোগ্য স্থানে পদোন্নতি দেওয়া হউক। টালবাহানার দিন শেষ এখন হচ্ছে স্বাধীনতার দেশ, মত প্রকাশের দেশ, মানবতার দেশ, সংস্কারের দেশ। তারা সংস্কারে বিশ্বাসী।
উল্লেখ্য চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সারাদেশের সকল নার্সরা কর্মবিরতী পালন করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ৬ অক্টোবর রবিবার দুজন নার্সিং কর্মকর্তাকে পরিচালক পদে পূর্ণ দায়িত্বে পদায়নের পরিবর্তে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। নার্সরা মনে করে উক্ত প্রজ্ঞাপন ১দফা দাবির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। যা সকল স্তরের নার্সরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। এরই প্রেক্ষিতে নার্সরা আবারো কর্মবিরতি পালন করছে।
৫ ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি শুধু সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য। জরুরি বিভাগ, ডায়ালাইসিস, জরুরি অস্ত্রোপচার, আইসিইউ, পিআইসিইউ, এনআইসিইউ এ কর্মসূচির বাইরে থাকবে।