Dhaka 2:44 pm, Sunday, 22 December 2024

কুমিল্লায় কমছে বন্যার পানি, ফুটে উঠছে ক্ষতচিহ্ন

বন্যায় অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে, ভেঙ্গে গেছে। অনেকের গোয়ালের গরু মারা গেছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। সরকারি অনেক অবকাঠামো বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাছের ঘের ভেসে গেছে, খামার ডুবে গেছে, কৃষিজমি শেষ হয়ে গেছে।

নদীর ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোয় ভয়াবহ ক্ষতির চিহ্ন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ছে সেখানকার মানুষ। সব হারিয়ে নিঃস্ব মানুষগুলোর সামনে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।
গোমতীর ভাঙনের ফলে বুড়িচং উপজেলার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন অন্তত ৬টি গ্রামের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকার পর ঘরের মালামাল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষকে পুনর্বাসনের পাশাপাশি তাদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ধীর গতিতে নামতে শুরু করেছে কুমিল্লায় বন্যার পানি। আর তাতেই জেগে উঠতে শুরু করেছে বন্যার ক্ষতগুলো। ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত জেলার ১৪টি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত ন্ন রোগবালাই। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট। দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাটগুলো। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষগুলো ফিরে এসে দেখছেন, ভেঙে পড়েছে অনেকের ঘরবাড়ি।

গোমতীর ভাঙন কবলিত বুড়িচং উপজেলার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন অন্তত ছয়টি গ্রামের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি কমতে শুরু করায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরে মানুষ দেখছেন অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে আছে।

এদিকে বানভাসি মানুষদের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে ১০ লাখ বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এছাড়া হাইজিং কিডবক্স, জেরিকেন, সাবান বিতরণ ও মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

কুমিল্লা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ বলেন, বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট রয়েছে। তড়িৎ ব্যবস্থায় আপাতত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের বন্যায় কুমিল্লায় ১৪ উপজেলায় প্লাবিত কৃষিখাত, মাছের ঘের, প্রাণি সম্পদ, রাস্তাঘাট ও ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মিলিয়ে জেলাজুড়ে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

জেলার ১৪ উপজেলার বন্যায় কবলিত ১২৫টি ইউনিয়নে ২০৭টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। গোমতী নদীর পানি বিপদসীমার ২৬০ সেন্টি মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

কুমিল্লায় কমছে বন্যার পানি, ফুটে উঠছে ক্ষতচিহ্ন

আপলোড সময় : 05:34:32 pm, Tuesday, 3 September 2024

বন্যায় অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে, ভেঙ্গে গেছে। অনেকের গোয়ালের গরু মারা গেছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। সরকারি অনেক অবকাঠামো বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাছের ঘের ভেসে গেছে, খামার ডুবে গেছে, কৃষিজমি শেষ হয়ে গেছে।

নদীর ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোয় ভয়াবহ ক্ষতির চিহ্ন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ছে সেখানকার মানুষ। সব হারিয়ে নিঃস্ব মানুষগুলোর সামনে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।
গোমতীর ভাঙনের ফলে বুড়িচং উপজেলার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন অন্তত ৬টি গ্রামের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকার পর ঘরের মালামাল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষকে পুনর্বাসনের পাশাপাশি তাদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ধীর গতিতে নামতে শুরু করেছে কুমিল্লায় বন্যার পানি। আর তাতেই জেগে উঠতে শুরু করেছে বন্যার ক্ষতগুলো। ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত জেলার ১৪টি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত ন্ন রোগবালাই। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট। দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাটগুলো। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষগুলো ফিরে এসে দেখছেন, ভেঙে পড়েছে অনেকের ঘরবাড়ি।

গোমতীর ভাঙন কবলিত বুড়িচং উপজেলার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন অন্তত ছয়টি গ্রামের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি কমতে শুরু করায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরে মানুষ দেখছেন অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে আছে।

এদিকে বানভাসি মানুষদের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে ১০ লাখ বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এছাড়া হাইজিং কিডবক্স, জেরিকেন, সাবান বিতরণ ও মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

কুমিল্লা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ বলেন, বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট রয়েছে। তড়িৎ ব্যবস্থায় আপাতত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের বন্যায় কুমিল্লায় ১৪ উপজেলায় প্লাবিত কৃষিখাত, মাছের ঘের, প্রাণি সম্পদ, রাস্তাঘাট ও ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মিলিয়ে জেলাজুড়ে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

জেলার ১৪ উপজেলার বন্যায় কবলিত ১২৫টি ইউনিয়নে ২০৭টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। গোমতী নদীর পানি বিপদসীমার ২৬০ সেন্টি মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।