কালুরঘাট সেতুতে এখন চলছে সড়ক তৈরির কাজ। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে কংক্রিট দিয়ে প্রথম ঢালাই। ওয়াকওয়ে ও কার্পেটিংয়ের কাজও প্রায় শেষ। শিগগিরই শুরু হবে দ্বিতীয় ঢালাইয়ের কাজ। দ্বিতীয় ঢালাই শেষ করতে লাগবে প্রায় এক মাস। এ কাজ শেষ হলে আশা করা যাচ্ছে যে আগামী মাসেই কালুরঘাট সেতু দিয়ে চলাচল করবে যানবাহন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা যায়, কালুরঘাট সেতুটি সংস্কারের জন্য গত বছরের ১ আগস্ট থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে সেতুর রেলপথ সংস্কারের পর ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল করছে। কয়েকটি ধাপে চলছে সংস্কার। এর মধ্যে সেতু দিয়ে পথচারী পারাপারের জন্য নতুন করে নির্মাণ হচ্ছে ওয়াকওয়ে। বর্তমানে ওয়াকওয়ের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ। এটি নির্মাণের ফলে পথচারীদের সেতুর মূল সড়কে আসতে হবে না। অন্যদিকে সেতুর মাঝে রেলট্র্যাক থাকায় কার্পেটিং সহজেই উঠে যেত এবং রেলট্র্যাকের অভ্যন্তরে পানি জমে পাতের ক্ষতি করত। এবার বিদ্যমান পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ রাখা হচ্ছে। এরই মধ্যে সেতুতে বিশেষ প্রযুক্তির ঢালাই দিয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এরপর ওই কংক্রিট ঢালাইয়ের ওপর পিচ দিয়ে সড়কপথ নির্মাণ করা হবে। তখন যান চলাচলের উপযুক্ত হবে। কালুরঘাট সেতুর ফোকালপারসন প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বর্তমানে সেতুর সংস্কার দ্রুতগতিতে চলছে, চেষ্টা চলছে এক থেকে দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে। কাজটি বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিমের নির্দেশনা অনুয়ায়ী চলছে। আমাদের চেষ্টা হলো দ্রুত কাজ শেষ করে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া। এতে মানুষের যোগাযোগ সহজ হবে।’
জানা যায়, ১৯৩১ সালে কর্ণফুলী নদীর ওপর ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করে ব্রুনিক অ্যান্ড কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মিয়ানমারের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগের জন্য ৬৩৮ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পরে দোহাজারী পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয় এ রেললাইন। এরপর সেতুটি প্রথমবারের মতো সংস্কার করা হয় ১৯৮৬-৮৭ সালে। ২০০১ সালে কালুরঘাট সেতু ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর ২০০৪-০৫ সালে চার-পাঁচ মাস ধরে একবার, ২০১২ সালে একবার এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আবারও সংস্কার শুরু করে এখনো চলছে। কিন্তু বারবার সংস্কার করা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়নি। নতুন করে সেতু নির্মাণে প্রায় ১১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার একটি ডিপিপি তৈরি করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়া এ খাতে ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে।