Dhaka 7:13 pm, Monday, 23 December 2024

কারারক্ষী মনিরুলের কর্মকাণ্ডে অস্বস্তিতে রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ

কারারক্ষী মনিরুল ইসলামের কর্মকাণ্ডে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও বাগে আনা যাচ্ছে না এই কারারক্ষীকে।

জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১ ডিসেম্বর কারারক্ষী পদে যোগ দেন মনিরুল ইসলাম। কারারক্ষী নং ৩২০৫৫। ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর জয়পুরহাট কারাগার থেকে বদলী হয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগদান করেন তিনি। তার বাড়ি নাটোর জেলায়।

বর্তমানে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে কর্মরত। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারারক্ষী মনিরুলের বিভিন্ন অপেশাদার ও বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ তাকে
শাস্তি দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপবাদ ও অপপ্রচার ছড়াচ্ছেন মনিরুল। এছাড়া ডিআইজি প্রিজন, সিনিয়র জেল সুপার, জেলারসহ কারা কর্তৃপক্ষকে বেকায়দায় ফেলতে একটি মিডিয়ায় মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করেন। আর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিজের বক্তব্য ভিডিও করে তা
সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন। যা চাকরিিধির লংঘন। বারবার সতর্ক করার পরেও তাকে নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত তাকে চাপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে শাস্তিমূলক বদলী করা হলেও তার বেআইনি কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।

এতে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার চাকরিকালে শৃঙ্খলাভঙ্গ, অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং নিষিদ্ধ দ্রব্য নিয়ে কারাভ্যন্তরে প্রবেশ করার কারণে বিভিন্ন সময়ে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ৩ টি বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে। তার স্বল্প চাকরিকালীন সময়ে শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে বিভিন্ন ধরনের/বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রাপ্ত হয়েছেন।

এছাড়া কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে নিরুদ্দেশ থাকায় সাময়িক বরখাস্তসহ বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয় তার বিরুদ্ধে। জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে এক হাজার পাঁচশত টাকা লেনদেন করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত সহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। স্ত্রী কর্তৃক যৌতুক

মামলায় তিন বছরের জন্য সশ্রম কারাদন্ড এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড হওয়ায় কারাগারে আটক হন এবং চাকরিচ্যুত হন মনিরুল ইসলাম। পরে আপিলের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের রায়ে শর্তসাপেক্ষে চাকরিতে পুনঃর্বহাল হন এবং ২ বছর ২ মাস ৫ দিন বিনা বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা হয়।

১৪ টি সিজুপিন ট্যাবলেট কারাভ্যান্তরে সরবরাহের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। এজন্য বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। প্রশাসন বিরোধী বেনামী পত্র লেখার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। এজন্য শাস্তি হিসেবে তাকে তিরস্কার করা হয়।

কারা উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয়ে গিয়ে তার সাথে বদলির বিষয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন কারারক্ষী মনিরুল। এ ধরণের আরো বহু অভিযোগ রয়েছে এই মনিরুলের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কারারক্ষী মনিরুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক বিষয়ে মামলা মুকাদমা হতেই পারে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আক্রোশমূলক ভাবে জেল কর্তৃপক্ষ যেসকল মামলা করেছেন সেগুলো একটাও সঠিকনা।

ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেন বলেন, আমি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগদানের আগেও কারারক্ষী মনিরুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ একাধিক অভিযোগ রযেছে। সাম্প্রতিক সময়ে কারাভ্যন্তরে ন্দিদের জন্য অবৈধ মালামাল সরবরাহের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। এর ফলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

কারারক্ষী মনিরুলের কর্মকাণ্ডে অস্বস্তিতে রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ

আপলোড সময় : 10:06:38 pm, Tuesday, 9 July 2024

কারারক্ষী মনিরুল ইসলামের কর্মকাণ্ডে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও বাগে আনা যাচ্ছে না এই কারারক্ষীকে।

জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১ ডিসেম্বর কারারক্ষী পদে যোগ দেন মনিরুল ইসলাম। কারারক্ষী নং ৩২০৫৫। ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর জয়পুরহাট কারাগার থেকে বদলী হয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগদান করেন তিনি। তার বাড়ি নাটোর জেলায়।

বর্তমানে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে কর্মরত। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারারক্ষী মনিরুলের বিভিন্ন অপেশাদার ও বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ তাকে
শাস্তি দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপবাদ ও অপপ্রচার ছড়াচ্ছেন মনিরুল। এছাড়া ডিআইজি প্রিজন, সিনিয়র জেল সুপার, জেলারসহ কারা কর্তৃপক্ষকে বেকায়দায় ফেলতে একটি মিডিয়ায় মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করেন। আর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিজের বক্তব্য ভিডিও করে তা
সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন। যা চাকরিিধির লংঘন। বারবার সতর্ক করার পরেও তাকে নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত তাকে চাপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে শাস্তিমূলক বদলী করা হলেও তার বেআইনি কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।

এতে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার চাকরিকালে শৃঙ্খলাভঙ্গ, অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং নিষিদ্ধ দ্রব্য নিয়ে কারাভ্যন্তরে প্রবেশ করার কারণে বিভিন্ন সময়ে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ৩ টি বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে। তার স্বল্প চাকরিকালীন সময়ে শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে বিভিন্ন ধরনের/বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রাপ্ত হয়েছেন।

এছাড়া কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে নিরুদ্দেশ থাকায় সাময়িক বরখাস্তসহ বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয় তার বিরুদ্ধে। জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে এক হাজার পাঁচশত টাকা লেনদেন করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত সহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। স্ত্রী কর্তৃক যৌতুক

মামলায় তিন বছরের জন্য সশ্রম কারাদন্ড এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড হওয়ায় কারাগারে আটক হন এবং চাকরিচ্যুত হন মনিরুল ইসলাম। পরে আপিলের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের রায়ে শর্তসাপেক্ষে চাকরিতে পুনঃর্বহাল হন এবং ২ বছর ২ মাস ৫ দিন বিনা বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা হয়।

১৪ টি সিজুপিন ট্যাবলেট কারাভ্যান্তরে সরবরাহের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। এজন্য বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। প্রশাসন বিরোধী বেনামী পত্র লেখার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। এজন্য শাস্তি হিসেবে তাকে তিরস্কার করা হয়।

কারা উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয়ে গিয়ে তার সাথে বদলির বিষয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন কারারক্ষী মনিরুল। এ ধরণের আরো বহু অভিযোগ রয়েছে এই মনিরুলের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কারারক্ষী মনিরুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক বিষয়ে মামলা মুকাদমা হতেই পারে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আক্রোশমূলক ভাবে জেল কর্তৃপক্ষ যেসকল মামলা করেছেন সেগুলো একটাও সঠিকনা।

ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেন বলেন, আমি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগদানের আগেও কারারক্ষী মনিরুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ একাধিক অভিযোগ রযেছে। সাম্প্রতিক সময়ে কারাভ্যন্তরে ন্দিদের জন্য অবৈধ মালামাল সরবরাহের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। এর ফলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।