নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি মেরামত বাবদ ৩ লাখ ২৯ হাজার টাকার ভূয়া বিল-ভাউচার দাখিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে পিয়ন তুহিন শেখ সোমবার সকালে বিলটি হিসাব রক্ষণ অফিসে দাখিল করেছিলেন।
এঘটনায় বুধবার ২০ মার্চ দুপুরে পিয়ন তুহিন শেখকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সাময়িকভাবে হাসপাতালের সব ধরণের কাজ থেকে অব্যহতিও দেওয়া হয়েছে তাকে।
পিয়ন তুহিন শেখের দাখিল করা ভূয়া ওই বিল-ভাউচারে দেখা যায়- ২১ নম্বর টিআর ফরমে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ‘ক্রয়, সরবরাহ ও সেবা বাবদ ব্যয়ের বিল’ দাখিল করা হয়েছে ৬৭ নম্বর ভাউচারে। সিংড়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হক এন্টার প্রাইজের স্বত্তাধিকারি নাজমুল হাসানের নামে বিল-ভাউচারটি হাসপাতাল থেকে ছাড় করা হয় ১৮ মার্চ। অর্থ প্রাপ্তির জন্য ওই দিনই উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে ভাউচারটি দাখিল করেন হাসপাতালের পিয়ন তুমিন শেখ।
বিলটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়- হিসাব রক্ষণ অফিসে বিলটি দাখিলের পর ওই অফিসের অডিটর নাজমুল হাসান, এসএএস সুপার মো. হাসান আলী ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন। তবে অডিটরের সন্দেহ হওয়ায় স্বাক্ষরিত বিলটি আটকে দেওয়া হয়।
গুরুদাসপুর হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর নাজমুল হাসান জানান- পিয়ন তুহিন শেখের দাখিল করা ৩ লাখ ২৯ হাজার ৯৯১ টাকার বিল-ভাউচারটিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুজাহিদুলের স্বাক্ষর দেখে তার সন্দেহ হয়। একারণে তিনি ভাউচারটি আটকে দেন। বিল-ভাউচারটি ছাড় করার জন্য পিয়ন তুহিন শেখ তাকে হুমকিও দেন। পরে মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বিষয়টি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে জানিয়ে বিলটি আটকে দেন।
তবে এ বিষয়ে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ কোনো বক্তব্য না দিয়ে সাংবাদিকদের সাথে উদ্ভট আচরণ করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানাযায়- তুহিন শেখ ২০১৯ সাল থেকে গুরুদাসপুর হাসপাতলে চাকুরি করছেন। পিয়ন পদে (চলতি দায়িত্ব) নিয়োগ পেলেও এখানে তাকে অফিস সহকারি হিসেবে কাজ করানো হতো। বিল ভাউচার থেকে শুরু করে অফিসের হিসাব সংক্রান্ত সব কাজই করতেন পিয়ন তুহিন শেখ। সেই সুযোগে মেরামতের ভূয়া বিল দাখিল করেন তিনি।
তবে ভূয়া বিল-ভাউচার দাখিলের কথা অস্বীকার করে পিয়ন তুহিন শেখ বলেন- বিলটির ব্যপারে তিনি কিছু জানেন না। বিলটির নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম নিজেই কাজ করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন- বুধবার ২০ মার্চ দুপুরে হিসাব রক্ষণ অফিসে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে তিনি বিলটি ভূয়া বলে আখ্যাতি করেন। এছাড়া মার্চ মাসে মেসার্স হক এন্টার প্রাইজ নামের কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে যন্ত্রপাতি মেরামতের কোনো কাজ করেনি। ভূয়া বিল দাখিলের অপরাধে পিয়ন তুহিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।