চলতি বছর হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী দলে ধর্ম মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য মন্ত্রণালয়-বিভাগ কিংবা দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাওয়ার সুযোগ পাবেন না। বিকল্প হিসেবে সৌদি আরবে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী, শ্রমিক ও নাগরিকদের মধ্য থেকে হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী দল গঠনের নির্দেশ দিয়ে ধর্ম সচিবকে চিঠি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তবে হজ কারিগরি দল এবং হজ চিকিৎসক দল আগের মতোই গঠন করা হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আ. হামিদ জমাদ্দার কালবেলাকে বলেন, এবার সৌদিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থী ও কর্মীদের মধ্য থেকে হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী দল গঠন করা হবে। সত্যি বলতেÑএখান থেকে যাদের নেওয়া হয় তারা আসলে কোনো কাজেই লাগে না। বরং তাদের পাহারা দিতে অতিরিক্ত লোকের প্রয়োজন হয়। এজন্য আমরা আরবি ভাষা জানে-বুঝে এবং সেখানকার রাস্তাঘাট চেনে এমন জনবল নিয়োগ দেব।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পবিত্র হজের সময় সৌদিতে অবস্থানরত আরবি ভাষাজ্ঞানসম্পন্ন ও মক্কা-মদিনার
রাস্তাঘাট সম্পর্কে সম্যক অবগত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, কর্মী ও নাগরিকদের মধ্য থেকে হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী নিয়োগের জন্য নির্দেশ ক্রমে অনুরোধ করা হলো। তবে, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সৌদিতে হজ ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য হজ মৌসুমে নিজস্ব জনবল থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়োগ দিতে পারবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এবার হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী দলে অন্য মন্ত্রণালয়-বিভাগ ও দপ্তর বা সংস্থা থেকে কাউকে নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে কেউ কেউ বিশেষ তদবির করে দলে ঢোকার চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হলো, শুধুমাত্র ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব জনবল দিয়েই এবারের হজ কার্যক্রম শেষ করা হবে। যেহেতেু হজের সময় বাকি আছে, সেহেতু শেষ পর্যন্ত সরকারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতেও পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি বছরই হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী দলে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়-বিভাগ এবং অন্যান্য
দপ্তর-সংস্থার দুই থেকে আড়াইশ কর্মকর্তা-কর্মচারী সৌদি যান। গত বছর হজে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাজীদের সেবার পরিবর্তে নানা প্রমোদ ভ্রমণে ব্যস্ত ছিলেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে আসায় হজ প্রশাসনিক দলে
‘যাকে-তাকে’ নেওয়ার সুযোগ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তাদের মতে, ঢালাওভাবে সবাইকে সহায়তাকারী দলে না নেওয়ার এ সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় বন্ধ হবে।
প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে এবার হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ১৮৫ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ২৫০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন যাবেন। সৌদির সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী এবার বাংলাদেশ ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা পেয়েছিল। তবে এ কোটা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। পাঁচ দফা নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েও হজে যাওয়ার লোক পায়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়।