প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রামে সেলিম, দেলোয়ারসহ যাঁরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের রক্তের ঋণ কখনো শোধ হওয়ার নয়। দীর্ঘ সংগ্রাম ও অনেক তাজা প্রাণের বিনিময়ে অবশেষে স্বৈরশাসকের পতন ঘটে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। আবারও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাংলাদেশের জনগণ ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরে পায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ ছাত্রনেতা সেলিম ও দেলোয়ারের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে আজ মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জীবনকে বিপন্ন করে বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর শূন্য হাতে তিনি একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন, যখন ব্যাংকে কোনো রিজার্ভ মানি ছিল না এবং কোনো কারেন্সি নোট ছিল না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ২৭৮টি রেল ব্রিজ এবং ২৭০টি সড়ক সেতু ধ্বংস করে, দুটি সমুদ্রবন্দরে মাইন পুঁতে এবং রাস্তাঘাটসহ সমস্ত স্থাপনা ধ্বংস করে রাখে। বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশের অর্থনীতিতে রেকর্ড ৯ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় এবং জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি প্রদান করে।
তিনি আরো বলেন, ‘জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গ্লানিকর যে ৭৫-এর ১৫ই আগস্ট পাকিস্তানিদের এদেশীয় দোসরদের হাতে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে তাঁর পরিবারের প্রায় সকল সদস্যসহ প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে। যার ফলে বাঙালিরা তাদের আত্মমর্যাদা হারিয়েছিল, হারিয়েছিল আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং সেই সঙ্গে তাদের সোনালি ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের সকল সম্ভাবনা। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর স্বৈরশাসকরা সঙ্গিনের খোঁচায় এ দেশের মানুষের ভাগ্য লিখতে শুরু করেছিল। আমরা দুই বোন বিদেশে থাকার কারণে আমাদেরকে তারা হত্যা করতে পারেনি।
দীর্ঘ ছয় বছর আমাদের বিদেশের মাটিতে রিফিউজি হিসেবে অবস্থান করতে হয়েছে।’