Dhaka 11:22 am, Monday, 23 December 2024

আবর্জনার স্তূপে হবে পার্ক, পথশিশুরা খেলবে ক্রিকেট

রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে গত বিশ বছরে ফ্লাইওভার, ইউলুপ, বিআরটি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মেট্রোরেলসহ নানারকম উড়ালপথ নির্মিত হয়েছে। তবে উড়ালসড়ক নির্মাণের সময় এর নিচের জমিগুলো নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। যার ফলে ঢাকায় বিভিন্ন উড়ালপথের অন্তত ১৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নিচে প্রায় ২০৭ একর জমি পড়ে আছে দখল-বেদখল, ব্যবহার-অব্যবহার ও অপব্যবহারে। অথচ এই মূল্যবান নগর-জমিগুলোকে সৃজনশীল ও জনবান্ধব পরিকল্পনার মাধ্যমে গণপরিসরে রূপান্তর করা সম্ভব।

 

মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের বর্তমান অবস্থা। ঢাকার বেশিরভাগ ফ্লাইওভারের নিচের অবস্থা এমনই। ছবি: সিআইএইউ

 

ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাগুলোর বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ আর্কিটেকচার অ্যান্ড আরবানিজম (সিআইএইউ) এক রূপকল্প তৈরি করেছে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এতে অর্থায়নে ও সহযোগিতা করেছে। গত ১৯ মে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে এ নিয়ে এক প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ও স্বাগত বক্তব্য দেন সিআইএইউ-এর নির্বাহী পরিচালক স্থপতি অধ্যাপক ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদ। এছাড়া নগর প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ, নগরবিদ, অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, পরিবেশকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ও প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।

উড়ালসড়কের নিচের জমির কার্যকরী ব্যবহারের রূপকল্প নিয়ে প্রদর্শনী

 

স্বাগত বক্তব্যে ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদ বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বর্তমানে ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড স্ট্রাকচারের নিচের অংশে জনবান্ধব, টেকসই ও সাশ্রয়ীভাবে ব্যবহার উপযোগী কমিউনিটি জোন তৈরি করা হচ্ছে। উড়ালসড়কের মতো অবকাঠামোর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা। এ বিষয়ে নগর প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং পরিকল্পনাগত ঘাটতি পূরণে অবদান রাখাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন ফ্লাইওভারের নিচে চোখে পড়বে রিকশা, ভ্যানগাড়ির পার্কিং, অস্থায়ী কাঁচাবাজার, ময়লা ফেলার ভাগাড়, ছোট ছোট দোকান, কিংবা ছিন্নমূল মানুষের আবাসস্থল। অনেক জায়গায় রাত হলেই দেখা যায় মাদকসেবীদের আনাগোনা। প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি কম থাকায় বিভিন্নধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও হয়। অল্পকিছু জায়গায় পথশিশুরা খেলাধুলা করে। এছাড়া অঢেল জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। মূল বিষয় হলো, সামগ্রিকভাবে এ নিয়ে কোনো নীতিমালা নেই। ফলে বেশিরভাগ জমির সুষম ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি।

রূপকল্প উপস্থাপনে ড. আদনান আরও বলেন, নগরের বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি ও পথচারীবান্ধব নগরায়ন ত্বরান্বিত করতে উড়ালপথের নিচের অংশকে কমিউনিটি-নির্ভর পরিকল্পনার আওতায় আনা প্রয়োজন। ঢাকার বিভিন্ন ফ্লাইওভার-সংলগ্ন এলাকার স্থানীয়দের মাঝে আমরা নৃতাত্ত্বিক জরিপ করেছি, যেখানে তাদের প্রতিদিনকার জীবনে ফ্লাইওভার ও এর নিচের জায়গার প্রভাব নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ঢালাওভাবে কোনো রৈখিক পরিকল্পনা না করে স্থানীয় এলাকার আর্থসামাজিক চরিত্র ও বর্তমান ব্যবহারের ধরন বুঝে কাজ করতে হবে। উড়ালপথের নিচে স্থাপন করা যেতে পারে পথশিশুদের অবৈতনিক বিদ্যালয়। হতে পারে ছোট পরিসরের ক্রিকেট অ্যাকাডেমি বা খেলাধুলার জায়গা। গণপরিবহনের যাত্রীদের জন্য মানসম্মত অপেক্ষাগার, জনসাধারণের জন্য পাঠাগার কিংবা ব্যায়ামাগার থাকতে পারে অন্যকোনো অংশে। নিম্ন-আয়ের মানুষ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য পরিকল্পিত জায়গা নির্ধারণ ও ছিন্নমূল মানুষের সাময়িক আশ্রয়স্থল তৈরিরও সুযোগ রয়েছে। এছাড়া পথচারীদের জন্য অবিচ্ছিন্ন হাঁটার পথ, সাইকেল লেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং মানসম্মত পাবলিক টয়লেটও স্থাপন করা যেতে পারে। নিচু অংশে গাড়ি পার্কিং ও পুলিশ বক্স বসানো যেতে পারে। যেখানে উচ্চতা বেশি, সেখানে হাঁটার ঝুলন্ত পথ তৈরি করা যেতে পারে।আলোচনা সভায় ড. আদনান মোর্শেদ, মেয়র আতিকুল ইসলাম ও স্টিফান লিলার

ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার বলেন, একটি নগরের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গতিশীল যোগাযোগব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকার প্রেক্ষাপটে সেই গতিশীলতা নিশ্চিত করতে যেসব উড়ালপথ নির্মাণ করা হয়েছে, তার নিচের জায়গাগুলোর কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। ভবিষ্যতের জন্য বাসযোগ্য ও টেকসই নগর নির্মাণে এসব জায়গা নিয়ে ভাবতে হবে। সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ আর্কিটেকচার অ্যান্ড আরবানিজম তাদের প্রস্তাবনার মাধ্যমে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করলো।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সম্প্রতি মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাকে স্ট্রিট আর্টের মাধ্যমে নান্দনিক ও আকর্ষণীয় করে তুলেছি। সাতরাস্তা ফ্লাইওভারের পিলারগুলোতেও স্ট্রিট আর্ট করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা উড়ালসড়কের নিচের অব্যবহৃত জায়গাগুলো নিয়ে ইতোমধ্যেই ভাবতে শুরু করেছি। সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ আর্কিটেকচার অ্যান্ড আরবানিজমের এই রূপকল্পকে সাধুবাদ জানাই। আমরা এই ধারণা কাজে লাগাব। নগরের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাগুলোর কার্যকরী ব্যবহারের রূপকল্প তৈরিতে ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদের নেতৃত্বে কাজ করেছেন স্থপতি শাফায়েত মাহমুদ, ওয়াসিলা ফাতিমা নিলিয়া, মো. ফাহিম হাসান রিজভী, সুমাইয়া আরা সিমি, অ্যাথেনা রহমান, আশিকুর রহমান তূর্য, উম্মে হাবিবা তূর্ণা এবং ফাহমিদা সাবাহ। এছাড়া বিভিন্ন ধাপে পরামর্শক হিসেবে যুক্ত ছিলেন পিপিআরসি’র নির্বাহী পরিচালক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী খান, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক, অর্থনীতিবিদ ড. সৈয়দ আখতার মাহমুদ, নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, সওজ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. ওয়ালিউর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজিনুল হক মোল্লা এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক তানভীর সোবহান।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

আবর্জনার স্তূপে হবে পার্ক, পথশিশুরা খেলবে ক্রিকেট

আপলোড সময় : 04:55:04 pm, Saturday, 1 June 2024

রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে গত বিশ বছরে ফ্লাইওভার, ইউলুপ, বিআরটি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মেট্রোরেলসহ নানারকম উড়ালপথ নির্মিত হয়েছে। তবে উড়ালসড়ক নির্মাণের সময় এর নিচের জমিগুলো নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। যার ফলে ঢাকায় বিভিন্ন উড়ালপথের অন্তত ১৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নিচে প্রায় ২০৭ একর জমি পড়ে আছে দখল-বেদখল, ব্যবহার-অব্যবহার ও অপব্যবহারে। অথচ এই মূল্যবান নগর-জমিগুলোকে সৃজনশীল ও জনবান্ধব পরিকল্পনার মাধ্যমে গণপরিসরে রূপান্তর করা সম্ভব।

 

মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের বর্তমান অবস্থা। ঢাকার বেশিরভাগ ফ্লাইওভারের নিচের অবস্থা এমনই। ছবি: সিআইএইউ

 

ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাগুলোর বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ আর্কিটেকচার অ্যান্ড আরবানিজম (সিআইএইউ) এক রূপকল্প তৈরি করেছে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এতে অর্থায়নে ও সহযোগিতা করেছে। গত ১৯ মে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে এ নিয়ে এক প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ও স্বাগত বক্তব্য দেন সিআইএইউ-এর নির্বাহী পরিচালক স্থপতি অধ্যাপক ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদ। এছাড়া নগর প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ, নগরবিদ, অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, পরিবেশকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ও প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।

উড়ালসড়কের নিচের জমির কার্যকরী ব্যবহারের রূপকল্প নিয়ে প্রদর্শনী

 

স্বাগত বক্তব্যে ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদ বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বর্তমানে ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড স্ট্রাকচারের নিচের অংশে জনবান্ধব, টেকসই ও সাশ্রয়ীভাবে ব্যবহার উপযোগী কমিউনিটি জোন তৈরি করা হচ্ছে। উড়ালসড়কের মতো অবকাঠামোর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা। এ বিষয়ে নগর প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং পরিকল্পনাগত ঘাটতি পূরণে অবদান রাখাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন ফ্লাইওভারের নিচে চোখে পড়বে রিকশা, ভ্যানগাড়ির পার্কিং, অস্থায়ী কাঁচাবাজার, ময়লা ফেলার ভাগাড়, ছোট ছোট দোকান, কিংবা ছিন্নমূল মানুষের আবাসস্থল। অনেক জায়গায় রাত হলেই দেখা যায় মাদকসেবীদের আনাগোনা। প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি কম থাকায় বিভিন্নধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও হয়। অল্পকিছু জায়গায় পথশিশুরা খেলাধুলা করে। এছাড়া অঢেল জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। মূল বিষয় হলো, সামগ্রিকভাবে এ নিয়ে কোনো নীতিমালা নেই। ফলে বেশিরভাগ জমির সুষম ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি।

রূপকল্প উপস্থাপনে ড. আদনান আরও বলেন, নগরের বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি ও পথচারীবান্ধব নগরায়ন ত্বরান্বিত করতে উড়ালপথের নিচের অংশকে কমিউনিটি-নির্ভর পরিকল্পনার আওতায় আনা প্রয়োজন। ঢাকার বিভিন্ন ফ্লাইওভার-সংলগ্ন এলাকার স্থানীয়দের মাঝে আমরা নৃতাত্ত্বিক জরিপ করেছি, যেখানে তাদের প্রতিদিনকার জীবনে ফ্লাইওভার ও এর নিচের জায়গার প্রভাব নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ঢালাওভাবে কোনো রৈখিক পরিকল্পনা না করে স্থানীয় এলাকার আর্থসামাজিক চরিত্র ও বর্তমান ব্যবহারের ধরন বুঝে কাজ করতে হবে। উড়ালপথের নিচে স্থাপন করা যেতে পারে পথশিশুদের অবৈতনিক বিদ্যালয়। হতে পারে ছোট পরিসরের ক্রিকেট অ্যাকাডেমি বা খেলাধুলার জায়গা। গণপরিবহনের যাত্রীদের জন্য মানসম্মত অপেক্ষাগার, জনসাধারণের জন্য পাঠাগার কিংবা ব্যায়ামাগার থাকতে পারে অন্যকোনো অংশে। নিম্ন-আয়ের মানুষ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য পরিকল্পিত জায়গা নির্ধারণ ও ছিন্নমূল মানুষের সাময়িক আশ্রয়স্থল তৈরিরও সুযোগ রয়েছে। এছাড়া পথচারীদের জন্য অবিচ্ছিন্ন হাঁটার পথ, সাইকেল লেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং মানসম্মত পাবলিক টয়লেটও স্থাপন করা যেতে পারে। নিচু অংশে গাড়ি পার্কিং ও পুলিশ বক্স বসানো যেতে পারে। যেখানে উচ্চতা বেশি, সেখানে হাঁটার ঝুলন্ত পথ তৈরি করা যেতে পারে।আলোচনা সভায় ড. আদনান মোর্শেদ, মেয়র আতিকুল ইসলাম ও স্টিফান লিলার

ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার বলেন, একটি নগরের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গতিশীল যোগাযোগব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকার প্রেক্ষাপটে সেই গতিশীলতা নিশ্চিত করতে যেসব উড়ালপথ নির্মাণ করা হয়েছে, তার নিচের জায়গাগুলোর কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। ভবিষ্যতের জন্য বাসযোগ্য ও টেকসই নগর নির্মাণে এসব জায়গা নিয়ে ভাবতে হবে। সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ আর্কিটেকচার অ্যান্ড আরবানিজম তাদের প্রস্তাবনার মাধ্যমে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করলো।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সম্প্রতি মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাকে স্ট্রিট আর্টের মাধ্যমে নান্দনিক ও আকর্ষণীয় করে তুলেছি। সাতরাস্তা ফ্লাইওভারের পিলারগুলোতেও স্ট্রিট আর্ট করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা উড়ালসড়কের নিচের অব্যবহৃত জায়গাগুলো নিয়ে ইতোমধ্যেই ভাবতে শুরু করেছি। সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ আর্কিটেকচার অ্যান্ড আরবানিজমের এই রূপকল্পকে সাধুবাদ জানাই। আমরা এই ধারণা কাজে লাগাব। নগরের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাগুলোর কার্যকরী ব্যবহারের রূপকল্প তৈরিতে ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদের নেতৃত্বে কাজ করেছেন স্থপতি শাফায়েত মাহমুদ, ওয়াসিলা ফাতিমা নিলিয়া, মো. ফাহিম হাসান রিজভী, সুমাইয়া আরা সিমি, অ্যাথেনা রহমান, আশিকুর রহমান তূর্য, উম্মে হাবিবা তূর্ণা এবং ফাহমিদা সাবাহ। এছাড়া বিভিন্ন ধাপে পরামর্শক হিসেবে যুক্ত ছিলেন পিপিআরসি’র নির্বাহী পরিচালক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী খান, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক, অর্থনীতিবিদ ড. সৈয়দ আখতার মাহমুদ, নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, সওজ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. ওয়ালিউর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজিনুল হক মোল্লা এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক তানভীর সোবহান।