Dhaka 11:09 pm, Monday, 30 December 2024

সরকারি সুযোগ-সুবিধা চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন অপসারিত ভাইস চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপসারিত হয়েছেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাবিবা ‌। অপসারিত হলেও বিশেষ বিবেচনায় আবাসন সুবিধা ও মাসিক সম্মানী ভাতার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি ।

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি জানান সাবেক এই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। নগরীর কাদিরগঞ্জে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাবিবা।

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাবিবা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাতটি মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন। সাতবার জেলে গিয়েছেন। এখনও দুটি মামলা বিচারাধীন। তাঁর স্বামী একজন চায়ের দোকানি। ৫ টাকা দামের চা বিক্রির টাকায় তিনি রাজনীতি করেন। এবার নির্বাচনে দল-মত নির্বিশেষে সবাই তাঁকে ভোট দেন। সর্বোচ্চ ৪২ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। দায়িত্ব র অল্পদিনের মধ্যেই গত সোমবার (১৯ আগস্ট) দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণ করেন সরকার।

ছাত্র আন্দোলনে তার সমর্থন রয়েছে জানিয়ে হাবিবা বলেন, পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে এতে আমার আফসোস নাই। তবে বিশেষ বিবেচনায় আমার মাসিক সম্মানী ভাতা দিলে আমার খুব উপকার হবে। কারণ আমি এখনও একজন শিক্ষার্থী। আমার স্বামী মাসুদ রানা একজন চা দোকানি। চা বিক্রি করে সংসার চালান। আমি সম্মানী ভাতার টাকাটা পেলে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকবে।

শেখ হাবিবা বলেন, ‘মোহনপুর থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস পুড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস, ভূমি অফিস ভাঙচুর হয়েছে। কিন্তু আমার ওপর হামলা হয়নি। আমি পালাইনি। কারণ, সবাই আমাকে ভালবাসে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি উপজেলা সদরে সরকারি কোয়ার্টারে উঠেছি। আমার ছোট্ট মেয়েটাকে মডেল স্কুলে ভর্তি করেছি। এ জন্য আমি এখনও সরকারি কোয়ার্টারে থাকতে চাই। আমাকে এই সুযোগটা দেওয়ার জন্য আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানাই।’

পদ থেকে অপসারিত হলেও মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়ারও দাবি জানান শেখ হাবিবা। তিনি বলেন, ‘আমি এখনও পড়াশোনা করি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে চতুর্থ বর্ষ চলছে। আমার স্বামী মাসুদ রানা একজন চা দোকানি। চা বিক্রি করে সংসার চালান। আমি সম্মানী ভাতার টাকাটা পেলে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকত। আমার কিছুই নেই। আমি সরকারের কাছে এটা চাই।’

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাবিবার মা ঘাষিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক মহিলা সদস্য মিনা বেগম উপস্থিত ছিলেন। দুই শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন শেখ হাবিবা।

ট্যাগস :

Write Your Comment

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

সরকারি সুযোগ-সুবিধা চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন অপসারিত ভাইস চেয়ারম্যান

আপলোড সময় : 05:37:32 pm, Wednesday, 21 August 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপসারিত হয়েছেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাবিবা ‌। অপসারিত হলেও বিশেষ বিবেচনায় আবাসন সুবিধা ও মাসিক সম্মানী ভাতার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি ।

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি জানান সাবেক এই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। নগরীর কাদিরগঞ্জে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাবিবা।

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাবিবা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাতটি মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন। সাতবার জেলে গিয়েছেন। এখনও দুটি মামলা বিচারাধীন। তাঁর স্বামী একজন চায়ের দোকানি। ৫ টাকা দামের চা বিক্রির টাকায় তিনি রাজনীতি করেন। এবার নির্বাচনে দল-মত নির্বিশেষে সবাই তাঁকে ভোট দেন। সর্বোচ্চ ৪২ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। দায়িত্ব র অল্পদিনের মধ্যেই গত সোমবার (১৯ আগস্ট) দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণ করেন সরকার।

ছাত্র আন্দোলনে তার সমর্থন রয়েছে জানিয়ে হাবিবা বলেন, পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে এতে আমার আফসোস নাই। তবে বিশেষ বিবেচনায় আমার মাসিক সম্মানী ভাতা দিলে আমার খুব উপকার হবে। কারণ আমি এখনও একজন শিক্ষার্থী। আমার স্বামী মাসুদ রানা একজন চা দোকানি। চা বিক্রি করে সংসার চালান। আমি সম্মানী ভাতার টাকাটা পেলে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকবে।

শেখ হাবিবা বলেন, ‘মোহনপুর থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস পুড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস, ভূমি অফিস ভাঙচুর হয়েছে। কিন্তু আমার ওপর হামলা হয়নি। আমি পালাইনি। কারণ, সবাই আমাকে ভালবাসে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি উপজেলা সদরে সরকারি কোয়ার্টারে উঠেছি। আমার ছোট্ট মেয়েটাকে মডেল স্কুলে ভর্তি করেছি। এ জন্য আমি এখনও সরকারি কোয়ার্টারে থাকতে চাই। আমাকে এই সুযোগটা দেওয়ার জন্য আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানাই।’

পদ থেকে অপসারিত হলেও মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়ারও দাবি জানান শেখ হাবিবা। তিনি বলেন, ‘আমি এখনও পড়াশোনা করি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে চতুর্থ বর্ষ চলছে। আমার স্বামী মাসুদ রানা একজন চা দোকানি। চা বিক্রি করে সংসার চালান। আমি সম্মানী ভাতার টাকাটা পেলে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকত। আমার কিছুই নেই। আমি সরকারের কাছে এটা চাই।’

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাবিবার মা ঘাষিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক মহিলা সদস্য মিনা বেগম উপস্থিত ছিলেন। দুই শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন শেখ হাবিবা।