Dhaka 11:45 pm, Monday, 23 December 2024

সমুদ্রগামী জাহাজের মালিকানায় শতকের ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশ

আগে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিগুলো দখল করে থাকতো বাংলাদেশের পণ্য নিয়ে আসা বিদেশি জাহাজ। এখন পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে। ২০১৩ সাল থেকে সমুদ্রগামী জাহাজ ব্যবসায় বিনিয়োগে এগিয়ে আসে বাংলাদেশের শিপিং ব্যবসায়ীরা। গত ১১ বছরে বাংলাদেশের সমুদ্রগামী জাহাজের বহরে যুক্ত হয়েছে ৯৯টি মাদার ভ্যাসেল। স্বাধীনতার পর দু’টি জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহন শুরু করেছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

 

এস আর শিপিংয়ের উপ মহাব্যবস্থাপক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজগুলো বিশ্বের প্রতিটি বন্দরে পৌঁছে যাওয়ার আশা সবার। অনেক ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও দেশের ব্যবসায়ীরা একের পর এক জাহাজ নামাচ্ছে, শুধু দেশের অর্থনৈতিক খাতের কথা চিন্তা করে।

 

বাংলাদেশের শিল্প গ্রুপগুলোর মধ্যে সমুদ্রগামী জাহাজের ক্ষেত্রে মেঘনা গ্রুপ এবং এস আর শিপিংয়ের মালিকানায় রয়েছে ২৪টি করে মাদার ভ্যাসেল। এরপর আকিজ গ্রুপের ১০টি। এছাড়া এইচ আর শিপিংয়ের ৮টি, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৭টি, ভ্যানগার্ডের ৬টি, বসুন্ধরা গ্রুপের ৬টি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আরও ১৪টি জাহাজ রয়েছে। শুধুমাত্র গত ৫ বছরেই নতুন-পুরাতন ৭১টি জাহাজ কিনেছেন বাংলাদেশের শিপিং ব্যবসায়ীরা।

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, এই খাতের বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক। মিলিয়ন মিলিয়ন টনের পণ্যবাহী কার্গো ও সমুদ্রগামী জাহাজ যত বেশি পরিমাণে নামানো সম্ভব হবে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনা তত বৃদ্ধি পাবে।

 

এমএসসি শিপিংয়ের হেড অফ অপারেশন আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, বিদেশি জাহাজগুলো এই পণ্য বহন করে অনেক টাকা আয় করতো। এখন দেশীয় জাহাজগুলো এই খাতে এগিয়ে আসার কারণে দেশের টাকা দেশেই থাকছে। বিশেষ করে আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত হচ্ছে।

 

এদিকে বাংলাদেশি মালিকানাধীন শততম সমুদ্রগামী জাহাজ হিসাবে নিজেদের কৃতিত্ব নেয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে রেখেছে মেঘনা গ্রুপ ‘মেঘনা সেঞ্চুরী’ নামে, এস আর শিপিং ‘জাহান-ওয়ান’ নামে এবং ভ্যানগার্ড গ্রুপ ‘রয়েল আরাকান’ জাহাজের নাম দিয়েই এই আবেদন করেছে। তবে বসুন্ধরা গ্রুপ আবেদন জানালেও জাহাজের নামকরণ করেনি।

 

নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, প্রায় সব শিপিং প্রতিষ্ঠানই এখন জাহাজ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। ২০২৪ সালের মধ্যে এই সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা ১২৫-এ পোঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি মালিকানাধীন ৯৯টি জাহাজের বহরের মধ্যে ৯টি জাহাজ একেবারেই নতুন মাদারভ্যাসেল।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

সমুদ্রগামী জাহাজের মালিকানায় শতকের ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশ

আপলোড সময় : 08:32:45 pm, Thursday, 23 May 2024

আগে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিগুলো দখল করে থাকতো বাংলাদেশের পণ্য নিয়ে আসা বিদেশি জাহাজ। এখন পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে। ২০১৩ সাল থেকে সমুদ্রগামী জাহাজ ব্যবসায় বিনিয়োগে এগিয়ে আসে বাংলাদেশের শিপিং ব্যবসায়ীরা। গত ১১ বছরে বাংলাদেশের সমুদ্রগামী জাহাজের বহরে যুক্ত হয়েছে ৯৯টি মাদার ভ্যাসেল। স্বাধীনতার পর দু’টি জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহন শুরু করেছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

 

এস আর শিপিংয়ের উপ মহাব্যবস্থাপক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজগুলো বিশ্বের প্রতিটি বন্দরে পৌঁছে যাওয়ার আশা সবার। অনেক ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও দেশের ব্যবসায়ীরা একের পর এক জাহাজ নামাচ্ছে, শুধু দেশের অর্থনৈতিক খাতের কথা চিন্তা করে।

 

বাংলাদেশের শিল্প গ্রুপগুলোর মধ্যে সমুদ্রগামী জাহাজের ক্ষেত্রে মেঘনা গ্রুপ এবং এস আর শিপিংয়ের মালিকানায় রয়েছে ২৪টি করে মাদার ভ্যাসেল। এরপর আকিজ গ্রুপের ১০টি। এছাড়া এইচ আর শিপিংয়ের ৮টি, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৭টি, ভ্যানগার্ডের ৬টি, বসুন্ধরা গ্রুপের ৬টি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আরও ১৪টি জাহাজ রয়েছে। শুধুমাত্র গত ৫ বছরেই নতুন-পুরাতন ৭১টি জাহাজ কিনেছেন বাংলাদেশের শিপিং ব্যবসায়ীরা।

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, এই খাতের বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক। মিলিয়ন মিলিয়ন টনের পণ্যবাহী কার্গো ও সমুদ্রগামী জাহাজ যত বেশি পরিমাণে নামানো সম্ভব হবে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনা তত বৃদ্ধি পাবে।

 

এমএসসি শিপিংয়ের হেড অফ অপারেশন আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, বিদেশি জাহাজগুলো এই পণ্য বহন করে অনেক টাকা আয় করতো। এখন দেশীয় জাহাজগুলো এই খাতে এগিয়ে আসার কারণে দেশের টাকা দেশেই থাকছে। বিশেষ করে আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত হচ্ছে।

 

এদিকে বাংলাদেশি মালিকানাধীন শততম সমুদ্রগামী জাহাজ হিসাবে নিজেদের কৃতিত্ব নেয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে রেখেছে মেঘনা গ্রুপ ‘মেঘনা সেঞ্চুরী’ নামে, এস আর শিপিং ‘জাহান-ওয়ান’ নামে এবং ভ্যানগার্ড গ্রুপ ‘রয়েল আরাকান’ জাহাজের নাম দিয়েই এই আবেদন করেছে। তবে বসুন্ধরা গ্রুপ আবেদন জানালেও জাহাজের নামকরণ করেনি।

 

নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, প্রায় সব শিপিং প্রতিষ্ঠানই এখন জাহাজ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। ২০২৪ সালের মধ্যে এই সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা ১২৫-এ পোঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি মালিকানাধীন ৯৯টি জাহাজের বহরের মধ্যে ৯টি জাহাজ একেবারেই নতুন মাদারভ্যাসেল।