Dhaka 8:46 pm, Sunday, 22 December 2024

শিক্ষাব্যবস্থাকে সরকার বহুমাত্রিক করেছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বে বৈশ্বিক মান বজায় রাখতে সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে বহুমাত্রিক ও সৃজনশীল করেছে। তিনি বলেন, আমরা বহুমুখী শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলন করেছি যাতে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। প্রধানমন্ত্রী সোমবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের (পিএমইএটি) মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাশ) এবং এর সমমানের অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। বৈশ্বিক চাহিদা অনুধাবন করে তার সরকার কৃষি, পশুচিকিৎসা, প্রাণিবিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চিকিৎসা, ডিজিটাল ইসলামিক, আরবি, টেক্সটাইল, সামুদ্রিক, বিমান চলাচল, মহাকাশ এবং ফ্যাশন ও প্রযুক্তি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে বহুমাত্রিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তির জ্ঞান ছাড়া কোনো দেশই পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। তাই আমরা বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেধাবী অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মেধাকে দেশ ও মানবকল্যাণে কাজে লাগাতে তাদের প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট (পিএমইএটি) গঠন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘দারিদ্র্য কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না’ উক্তির স্মরণ করেন।

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও সমমানের ৬৪ লাখ ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে মোট ২ হাজার ২০৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। অর্থ বিতরণের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপবৃত্তি ও টিউশন ফির টাকা ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সরাসরি সুবিধাভোগীদের কাছে যাবে।

শেখ হাসিনা ১৫ জন শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অনুসন্ধান পুরস্কার-২০২৪ (ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ অ্যাওয়ার্ড-২০২৪) এবং ২১ শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ পুরস্কারপ্রাপ্ত ১৫ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র ও ২ লাখ টাকা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার পুরস্কারপ্রাপ্ত ২১ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র ও ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার ও শিক্ষাসচিব সুলেমান খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

হাজারীবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান মালিহা, দিনাজপুরের আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী আতিফা রহমান ও খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র পিনাক মুগ্ধ দাস ‘বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ-২০২৪’ (বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অনুসন্ধান-২০২৪)-এর পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম রাইসা ও আল ফয়সাল বিন কাশেম কানন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ড-২০২৩-এর পুরস্কার গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে তারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এখন যদি সারাক্ষণ কেউ বলে পড়, পড়, পড়-এটা কি ভালো লাগে বলো? মোটেই ভালো লাগে না। এটা কিন্তু বাস্তব কথা, যাওবা একটা পড়ার ইচ্ছা থাকে, তাও নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য এমনভাবে শিক্ষাব্যবস্থাটা করা, যাতে আগ্রহ নিয়েই ছেলেমেয়েরা পড়বে। তিনি বলেন, জানি, একটা পরিবর্তন এলে অনেকেই নানা ধরনের কথা বলে। তাছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ, সোশ্যাল মিডিয়ায় যার যা মনে আছে-সমালোচনা করতে পারলেই খুশি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের মনে আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। নিজের ওপর বিশ্বাস থাকতে হবে। কেউ একটু সমালোচনা করলে অমনিই সেটার জন্য ভীত হয়ে যেতে হবে। আমি এটা বিশ্বাস করি না। আত্মমর্যাদাবোধ, আত্মবিশ্বাসই মানুষকে শক্তি দেয়।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

শিক্ষাব্যবস্থাকে সরকার বহুমাত্রিক করেছে: প্রধানমন্ত্রী

আপলোড সময় : 07:08:17 pm, Wednesday, 26 June 2024

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বে বৈশ্বিক মান বজায় রাখতে সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে বহুমাত্রিক ও সৃজনশীল করেছে। তিনি বলেন, আমরা বহুমুখী শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলন করেছি যাতে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। প্রধানমন্ত্রী সোমবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের (পিএমইএটি) মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাশ) এবং এর সমমানের অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। বৈশ্বিক চাহিদা অনুধাবন করে তার সরকার কৃষি, পশুচিকিৎসা, প্রাণিবিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চিকিৎসা, ডিজিটাল ইসলামিক, আরবি, টেক্সটাইল, সামুদ্রিক, বিমান চলাচল, মহাকাশ এবং ফ্যাশন ও প্রযুক্তি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে বহুমাত্রিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তির জ্ঞান ছাড়া কোনো দেশই পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। তাই আমরা বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেধাবী অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মেধাকে দেশ ও মানবকল্যাণে কাজে লাগাতে তাদের প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট (পিএমইএটি) গঠন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘দারিদ্র্য কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না’ উক্তির স্মরণ করেন।

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও সমমানের ৬৪ লাখ ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে মোট ২ হাজার ২০৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। অর্থ বিতরণের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপবৃত্তি ও টিউশন ফির টাকা ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সরাসরি সুবিধাভোগীদের কাছে যাবে।

শেখ হাসিনা ১৫ জন শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অনুসন্ধান পুরস্কার-২০২৪ (ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ অ্যাওয়ার্ড-২০২৪) এবং ২১ শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ পুরস্কারপ্রাপ্ত ১৫ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র ও ২ লাখ টাকা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার পুরস্কারপ্রাপ্ত ২১ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র ও ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার ও শিক্ষাসচিব সুলেমান খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

হাজারীবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান মালিহা, দিনাজপুরের আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী আতিফা রহমান ও খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র পিনাক মুগ্ধ দাস ‘বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ-২০২৪’ (বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অনুসন্ধান-২০২৪)-এর পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম রাইসা ও আল ফয়সাল বিন কাশেম কানন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ড-২০২৩-এর পুরস্কার গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে তারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এখন যদি সারাক্ষণ কেউ বলে পড়, পড়, পড়-এটা কি ভালো লাগে বলো? মোটেই ভালো লাগে না। এটা কিন্তু বাস্তব কথা, যাওবা একটা পড়ার ইচ্ছা থাকে, তাও নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য এমনভাবে শিক্ষাব্যবস্থাটা করা, যাতে আগ্রহ নিয়েই ছেলেমেয়েরা পড়বে। তিনি বলেন, জানি, একটা পরিবর্তন এলে অনেকেই নানা ধরনের কথা বলে। তাছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ, সোশ্যাল মিডিয়ায় যার যা মনে আছে-সমালোচনা করতে পারলেই খুশি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের মনে আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। নিজের ওপর বিশ্বাস থাকতে হবে। কেউ একটু সমালোচনা করলে অমনিই সেটার জন্য ভীত হয়ে যেতে হবে। আমি এটা বিশ্বাস করি না। আত্মমর্যাদাবোধ, আত্মবিশ্বাসই মানুষকে শক্তি দেয়।