Dhaka 5:02 pm, Saturday, 21 December 2024
বেকিং নিউজ :

রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অপহরন ও চাঁদাবাজির মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে এক প্লট ব্যবসায়ীকে বাড়ি থেকে অপহরন করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২৩ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এক প্লট ব্যবসায়ী। ওই প্লট ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী পবা উপজেলার এয়ারপোর্ট থানার বিরস্তইল গ্রামের মৃত শাহাদাত হোসেনের ছেলে মাহবুবর রহমান (৪৫)।

গত ২০২৪ সালে ২২ আগস্ট  রাজশাহী জেলা বিজ্ঞ এয়ারপোর্ট আমলি আদালতে অপহরনের পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৩২ লাখ টাকা চাঁদা বাজি, নির্যাতন ও ফাঁকা ৩০ টি ননজুডিশিয়াল স্টেম্পে স্বাক্ষর করে নেয়ার অপরাধে মামলাটি দায়ের করেন মাহবুব । মামলা নং ৫৫/২০২৪। মামলাটি বিচারক পিবিআইকে তদন্ত ভার দিয়েছে ও মামলার ধার্য্য তারিখ আগামী অক্টবর মাসের ৭ তারিখ।

মামলার আসামীরা হলেন, নগর যুবলীগের অর্থ সম্পাদক বোয়ালিয়া থানার মকবুল হাবিলদারের মোড়ের আব্দুল মতিনের ছেলে সৈয়দ জাফর মতিন রাজিব (৩৯), পবা উপজেলার চন্দ্রপুকুর গ্রামের মৃত খারু ম্ডলে সিম রেজা (৪০), পবা পানিশাইল গ্রামের মজিবরের ছেলে মাজদার আলী (৪০), রাজপাড়া থানার ঝাউতলা মোড়ের মৃত আবু কাক্কার হাজীর ছেলে মাফিকুল ইসলাম মুন্না, পবা উপজেলার বারোইপাড় গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আমিনুল হাজিসহ অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাহবুব রহমানসহ কয়েকজন মিলে রাজশাহীতে প্লটের ব্যবসা করছিলেন দীর্ঘদিন যাবত। এর মধ্যে তাদের পার্টনার দের মধ্যে টাকা পয়সা নিয়ে একটু ভেজাল চলছিলো। এর মধ্যে মামলার ৪ নং আসামী মফিকুল ইসসলাম মুন্না একটি জমি বিক্রি করবে বলে তাদের কাছে থেকে ৩২ লাখ ৭২ হাজার টাকা স্টেম্পে লিখা পড়া করে বায়নামা গ্রহন করে। পরে জিমিটি রেজিস্ট্রি চাইলে রেজেস্ট্রি দিতে টালবাহানা করে। পরে জানা যায় ওই জমির আরো ৫০ জন ওয়ারিস রয়েছে। পরে টাকা ফেরত চাইলে মুন্না বারবার চেক লিখে দিতে দেই। তারা পরে বুঝতে পারে তাদের সাথে জমি বিক্রির নামে প্রতারণা করেছে মুন্না।

এদিকে মাহবুরের পার্টনার সেলিম ও মাজদারের কাছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা হয় মাহবুব। এর মধ্যে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের অর্থ সম্পাদক রাজিবের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাশী হটাৎ ২০২৪ সালের ৭ মার্চ সন্ধার দিকে পবা ভুগরইলের মোড় থেকে অস্ত্র পিস্তলের মুখে জিম্মি করে মাহবুবকে তুলে নিয়ে গিয়ে যুবলীগ নেতা রাজিবের সাগরপাড়া কল্পনা সিনামা হল মোড়ে তার চেম্বারে নিয়ে গিয়ে ব্যপক মারপিট নির্যাতন করে ও পায়ের মাঝখানে ফাঁকা গুলি করে ২ টি। এসময় মাহবুবের মাথায় পিস্তল ধরে ২০ টি ফাঁকা ননজুডিশিয়াল স্টেম্পে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করে নেই এবং ২০ লাখ টাকা মুক্তিপোন হিসাবে চাঁদা দাবি করে সারা রাত নির্যাতন করে। বিষয়টি ওই রাতে থানা পুলিশ কে জানালে ঘটনা স্থলে পুলিশ গিয়ে আসামীদের সাথে কথা বলে মাহবুবকে উদ্ধার না করে চলে যায়।

পুলিশ কে জানানোর জন্য রাজিবসহ আসামীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাহবুবের প্রতি। পরে রাজিবসহ আসামীরা ৭ দিনের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তার কাছে। টাকা না দিলে গুলি করে মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করে। পরে মাহবুবের পার্টনারদের মাধ্যমে ওই রাতে রাজিবকে ৭ লাখ টাকা দিয়ে তাকে সকাল ৬ টার দিকে চেম্বার থেকে র রে। এ ঘটনার পরে রাজিবসহ আসামীরা মাহবুবকে আরো ৩ বার বিভিন্ন স্পর্টে আটক করে প্রকাশ্যে পিস্তল কপালে ধরে আরো ১০ টি স্টেম্পে স্বাক্ষর করে নেই এবং ৩২ লাখ টাকা চাঁদার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরে মাহবুবের বারোইপাড়া মৌজার জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে বলে যুবলীগ নেতা রাজিব। জমি লিখে দিলে সইকরা তার স্টেম্প ফেরত দিবে বলে জানায়।

জমি রেজিস্টি দিতে অস্বীকার করলে মাহবুবের বাড়িতে গিয়ে আবার ২৮ জুলাই রাত ২ টার দিকে রাজিবসহ ১৫-২০ জন ফাঁকা গুলি করে আতংক সিষ্টি করে।

মাহবুব জানায়, যুবলীগ নেতা রাজিবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। সেই সময় কোন প্রশাসনিক সহায়তা পাইনি। রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে সেই সময় থানা তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেইনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আমি তাদের বিচার চাই। বর্তমানে সরকার পতনের পরেও তারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে। সন্ত্রাশী, অস্ত্রধারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকদের বিচার চাই আমি।

এ বিষয় যুবলীগ নেতা রাজিবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অপহরন ও চাঁদাবাজির মামলা

আপলোড সময় : 08:20:07 pm, Wednesday, 11 September 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে এক প্লট ব্যবসায়ীকে বাড়ি থেকে অপহরন করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২৩ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এক প্লট ব্যবসায়ী। ওই প্লট ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী পবা উপজেলার এয়ারপোর্ট থানার বিরস্তইল গ্রামের মৃত শাহাদাত হোসেনের ছেলে মাহবুবর রহমান (৪৫)।

গত ২০২৪ সালে ২২ আগস্ট  রাজশাহী জেলা বিজ্ঞ এয়ারপোর্ট আমলি আদালতে অপহরনের পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৩২ লাখ টাকা চাঁদা বাজি, নির্যাতন ও ফাঁকা ৩০ টি ননজুডিশিয়াল স্টেম্পে স্বাক্ষর করে নেয়ার অপরাধে মামলাটি দায়ের করেন মাহবুব । মামলা নং ৫৫/২০২৪। মামলাটি বিচারক পিবিআইকে তদন্ত ভার দিয়েছে ও মামলার ধার্য্য তারিখ আগামী অক্টবর মাসের ৭ তারিখ।

মামলার আসামীরা হলেন, নগর যুবলীগের অর্থ সম্পাদক বোয়ালিয়া থানার মকবুল হাবিলদারের মোড়ের আব্দুল মতিনের ছেলে সৈয়দ জাফর মতিন রাজিব (৩৯), পবা উপজেলার চন্দ্রপুকুর গ্রামের মৃত খারু ম্ডলে সিম রেজা (৪০), পবা পানিশাইল গ্রামের মজিবরের ছেলে মাজদার আলী (৪০), রাজপাড়া থানার ঝাউতলা মোড়ের মৃত আবু কাক্কার হাজীর ছেলে মাফিকুল ইসলাম মুন্না, পবা উপজেলার বারোইপাড় গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আমিনুল হাজিসহ অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাহবুব রহমানসহ কয়েকজন মিলে রাজশাহীতে প্লটের ব্যবসা করছিলেন দীর্ঘদিন যাবত। এর মধ্যে তাদের পার্টনার দের মধ্যে টাকা পয়সা নিয়ে একটু ভেজাল চলছিলো। এর মধ্যে মামলার ৪ নং আসামী মফিকুল ইসসলাম মুন্না একটি জমি বিক্রি করবে বলে তাদের কাছে থেকে ৩২ লাখ ৭২ হাজার টাকা স্টেম্পে লিখা পড়া করে বায়নামা গ্রহন করে। পরে জিমিটি রেজিস্ট্রি চাইলে রেজেস্ট্রি দিতে টালবাহানা করে। পরে জানা যায় ওই জমির আরো ৫০ জন ওয়ারিস রয়েছে। পরে টাকা ফেরত চাইলে মুন্না বারবার চেক লিখে দিতে দেই। তারা পরে বুঝতে পারে তাদের সাথে জমি বিক্রির নামে প্রতারণা করেছে মুন্না।

এদিকে মাহবুরের পার্টনার সেলিম ও মাজদারের কাছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা হয় মাহবুব। এর মধ্যে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের অর্থ সম্পাদক রাজিবের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাশী হটাৎ ২০২৪ সালের ৭ মার্চ সন্ধার দিকে পবা ভুগরইলের মোড় থেকে অস্ত্র পিস্তলের মুখে জিম্মি করে মাহবুবকে তুলে নিয়ে গিয়ে যুবলীগ নেতা রাজিবের সাগরপাড়া কল্পনা সিনামা হল মোড়ে তার চেম্বারে নিয়ে গিয়ে ব্যপক মারপিট নির্যাতন করে ও পায়ের মাঝখানে ফাঁকা গুলি করে ২ টি। এসময় মাহবুবের মাথায় পিস্তল ধরে ২০ টি ফাঁকা ননজুডিশিয়াল স্টেম্পে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করে নেই এবং ২০ লাখ টাকা মুক্তিপোন হিসাবে চাঁদা দাবি করে সারা রাত নির্যাতন করে। বিষয়টি ওই রাতে থানা পুলিশ কে জানালে ঘটনা স্থলে পুলিশ গিয়ে আসামীদের সাথে কথা বলে মাহবুবকে উদ্ধার না করে চলে যায়।

পুলিশ কে জানানোর জন্য রাজিবসহ আসামীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাহবুবের প্রতি। পরে রাজিবসহ আসামীরা ৭ দিনের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তার কাছে। টাকা না দিলে গুলি করে মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করে। পরে মাহবুবের পার্টনারদের মাধ্যমে ওই রাতে রাজিবকে ৭ লাখ টাকা দিয়ে তাকে সকাল ৬ টার দিকে চেম্বার থেকে র রে। এ ঘটনার পরে রাজিবসহ আসামীরা মাহবুবকে আরো ৩ বার বিভিন্ন স্পর্টে আটক করে প্রকাশ্যে পিস্তল কপালে ধরে আরো ১০ টি স্টেম্পে স্বাক্ষর করে নেই এবং ৩২ লাখ টাকা চাঁদার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরে মাহবুবের বারোইপাড়া মৌজার জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে বলে যুবলীগ নেতা রাজিব। জমি লিখে দিলে সইকরা তার স্টেম্প ফেরত দিবে বলে জানায়।

জমি রেজিস্টি দিতে অস্বীকার করলে মাহবুবের বাড়িতে গিয়ে আবার ২৮ জুলাই রাত ২ টার দিকে রাজিবসহ ১৫-২০ জন ফাঁকা গুলি করে আতংক সিষ্টি করে।

মাহবুব জানায়, যুবলীগ নেতা রাজিবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। সেই সময় কোন প্রশাসনিক সহায়তা পাইনি। রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে সেই সময় থানা তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেইনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আমি তাদের বিচার চাই। বর্তমানে সরকার পতনের পরেও তারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে। সন্ত্রাশী, অস্ত্রধারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকদের বিচার চাই আমি।

এ বিষয় যুবলীগ নেতা রাজিবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।