কোটা সংস্কার ইস্যুতে রাজশাহীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের না পেয়ে এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় আওয়ামী অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম মো. সোহানুর রহমান। তিনি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিবার্তা২৪ ও দৈনিক স্বপ্নের বাংলাদেশ পত্রিকার রিপোর্টার।
সাংবাদিক মো. সোহানুর রহমান বলেন, বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলাম। সন্ধ্যার দিকে সাহেব বাজার এলাকায় আসি। কুমারপাড়ায় আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে আসতেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে। আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা লাঠিশোটা দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। এ সময় সেখানে পুলিশ ছিল। আমার মোবাইল ফোনটি একজন পুলিশ সদস্যের হাতে দিই।
তিনি বলেন, একজন অটোরিকশাচালক আমাকে সেখানে খেকে দ্রুত কাজলার দিকে নিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে একজন আম বিক্রেতার সহযোগিতায় আমাকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার হাত-পা ও মাথায় আঘাত করা হয়েছে। এতে তার কপালের কাছে কেটে গেছে। ব্যান্ডেজ করে ওষুধপত্র লিখে দেয়া হয়েছে।
সাহেব বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, বেলা ৩টায় কোটা সংস্কারের দাবিতে জিরো পয়েন্টে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি। বিকেলে ছাত্ররা তালাইমারী ও কাজলার দিকে চলে যান। সন্ধ্যায় তারা জিরো পয়েন্ট এলাকায় ছিলেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ও স্থানীয় ফুটপাত দোকানীরা ছিলেন। ‘শিক্ষার্থীরা নেই’- এমন খবর পেয়ে কুমারপাড়ার আশপাশে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা আসেন। এসময় তারা বেশ কয়েকটি দোকানঘর ভাঙচুর করেন। দোকানের লোকজনকেও বেধড়ক পেটান। আতঙ্কিত হয়ে সবাই ছোটাছুটি শুরু করেন। জিরো পয়েন্ট এলাকা মুহূর্তেই জনশূণ্য হয়ে যায়।
তবে সাংবাদিককে পেটানোর ঘটনায় মহানগরীর শাহ মখদুম থানা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে সংগঠনটির একজন নেতা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, আমরা রাজশাহী কলেজ, মনিচত্বর ও সোনাদিঘির মোড়ের এদিকে ছিলাম। কুমারপাড়া ও এর আশপাশে শাহ মখদুম থানা ছাত্রলীগ নেতারা ছিল। তারাই সাংবাদিককে পিটিয়েছে।
এ বিষয়ে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ না থাকলে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারত। আমাদের অফিসাররা তার মোবাইল রেখে তাকে হাসপাতালে পাঠান। পরে তাকে মোবাইল বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।