এম ইসলাম দিলদার, বাঘা রাজশাহী প্রতিনিধি : টদক্ষ, বিচক্ষণ, মানবিক ও সদালাপী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসাবে পরিচিত মো: তরিকুল ইসলাম। তিনি মাত্র সাড়ে ১০ মাস আগে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। সল্প সময়ের মধ্যেই তিনি সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রিয় মানুষে পরিণত হয়েছিলেন। হঠাৎ তার বদলীর খবরে বিচলিত হয়ে পরেছে এই উপজেলার জনসাধারণ। ইউএনও মো: তরিকুল ইসলাম কে বাঘা উপজেলায় বহাল রাখার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার ( ২৩ অক্টোবর) বেলা আনুমানিক সাড়ে ১২ টার সময় বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের আয়োজনে ও অংশ গ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঘা উপজেলা পরিষদ গেটের সামনের সড়কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তরিকুল ইসলাম কে আরো ছয় মাস বাঘায় বহাল রাখতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন। বর্তমান সরকারের কাছে তাদের দাবি একটাই” জনস্বার্থে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদে চৌকস অফিসার মো: তরিকুল ইসলাম কে বহাল রাখতে হবে। তাকে বর্তমান সময়ে এই জনপদের মানুষের বড় প্রয়োজন।
জানা যায়, গত ১৭ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মুহাম্মাদ ইব্রাহীমের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে মো: তরিকুল ইসলাম কে পদন্নোতি করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে চাঁপাইনবয়াবগঞ্জ বদলির আদেশ জারি করা হয়। এর আগে তিনি তার কর্মজীবনে (বর্তমান) রাজশাহীর বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ১৩ই ডিসেম্বর ২০২৩ ইং সালে যোগদান করে সাড়ে ১০ মাস দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও পটুয়াখালী ডিসি অফিস, বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়, রাজশাহী আরডিসি, সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পাবনা শাজাদপুর নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করে এসেছেন।সেবা প্রদানে করেননি কখনো কার্পণ্যতা। কর্মজীবনে যেখানেই দায়িত্ব পালন করেন সেখানেই হাস্যজ্জল মুখে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সমাজিক সংগঠনের সাথে সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে চলেছেন তিনি।
মো: তরিকুল ইসলাম বাঘায় যোগদানের পর থেকেই প্রতিটি সরকারি অফিসে শৃংখলা ফিরতে শুরু করে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও তাঁর পদচারনা ছিলো প্রশংসনীয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা প্রদর্শণ করা ছিল তাঁর অনন্য গুণ। সরকারি কর্মকর্তা বা সাধারণ মানুষের সাথে সদালাপ, আলাপচারিতা বা এলাকার উন্নয়নসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সকলের মতামত নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবার মতোন অসাধারণ গুণ মো: তরিকুল ইসলামের মাঝে বিদ্যমান। তাই বাঘা উপজেলার সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি বেশ সন্তোষজনক ছিলো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে ইউএনও ছুঁটে গিয়েছেন বাড়িতে, ফেনীসহ বিভিন্ন জেলার বন্যার্তদের জন্য নিজ অর্থায়নে খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থা করেছেন। এলাকার অসহায়, দুঃস্থ্যদের জন্য সর্বদা বাড়িয়ে দিতেন সাহায্যের হাত। শিক্ষক মহল, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বিএনপি ও বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মো: তরিকুল ইসলাম কে বাঘা উপজেলায় রাখতে চান। তাকে আরো কিছু দিন বাঘা উপজেলায় রাখতে বর্তমান সরকারের সুদৃষ্টি আশা করছে বাঘাবাসী।
সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, মো: তরিকুল ইসলামের বদলীর খবরে কষ্ট পেয়েছেন তারা। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, নম্রতা, কাজের প্রতি আগ্রহ রয়েছে যার মধ্যে তাঁকেই এলাকার জন্য বড় প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তরিকুল ইসলাম কে বাঘার আপামর জনসাধারনের জন্য প্রয়োজন। এমন ভালো অফিসারের বদলী হলে বাঘার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
মানববন্ধনে বাঘা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফকরুল ইসলাম বাবুল বলেন, একজন সৎ অফিসার মো: তরিকুল ইসলাম। তাঁকে দিয়েই বাঘার উন্নয়ন ও শৃংখলা ধরে রাখা সম্ভব। বদলীর খবর শুনে হতাশ হলাম। তিনি একজন ভালো মানুষ। এমন ভালো অফিসার বাঘার মানুষের জন্য আশির্বাদ। বর্তমান সরকারের কাছে দাবি মো: তরিকুল ইসলামকে বাঘা উপজেলায় অন্তত আরো ছয়টি মাস বহাল রাখা হোক।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাঘা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম বাবুল, সদস্য সচিব ও বাউসা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মলিন,উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সদস্য মোকলেসুর রহমান মুকুল, বাঘা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম তফি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুরুজ্জামান সুরুজ, বাউসা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা অধক্ষ্য রেজাউল করিম, উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক সালেহ আহমেদ সালাম, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক শফিকুল ইসলাম শফি, গড়গড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি রবি সহ শত শত জনসাধারণ এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।