প্রমত্তা পদ্মার দুই তীরকে যুক্ত করা বাংলাদেশের গর্বের পদ্মা সেতু ঘুরে দেখলেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। গতকাল বুধবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতুতে প্রবেশ করে রাজার গাড়ি বহর। মাঝ সেতুতে নেমে কিছু সময় কাটিয়ে তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পৌঁছান ৯টা ৩০ মিনিটে। সেতুতে রাজা ১০ মিনিট অবস্থান করেন এবং পায়ে হেঁটে পদ্মার রূপ উপভোগ করেন ও তার মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। এদিন রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক পদ্মা সেতু দেখার পর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোনও পরিদর্শন করেন।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী রজব আলী ও মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন ভুটান রাজের পদ্মা সেতু পরিদর্শনের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, জাজিরার পথে রওনা হওয়ার পর সেতুর মাঝামাঝি ১৮ নম্বর পিলারের কাছে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন রাজা। ১০ মিনিট তিনি সেখানে অবস্থান করেন এবং পায়ে হেঁটে পদ্মার রূপ উপভোগ করেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী রজব আলী জানান, জাজিরা প্রান্ত থেকে ফিরতি যাত্রায় মাত্র ৫ মিনিটে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু পেরিয়ে আবার মাওয়ায় ফেরে গাড়ি বহর।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এ সময় ভুটানের রাজার সঙ্গে ছিলেন। পদ্মা সেতুতে রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের কয়েকটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন প্রতিমন্ত্রী। ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিলসহ রাজার সঙ্গে আসা দেশটির প্রতিনিধিদলের সদস্যরাও পদ্মা সেতু ভ্রমণের সময় উপস্থিত ছিলেন। ভুটানের রাজার আগমনে পুরো সড়কপথে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
বুধবার পদ্মা সেতু দেখার পর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোনও পরিদর্শন করেন রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা প্রতিনিধি জানান, উপজেলার জাপান স্পেশাল ইকোনমিক জোনের চলমান কাজ পরিদর্শন করে সন্তোষ জানিয়েছেন ভুটানের রাজা। একই সঙ্গে তিনি এর পরিকল্পনা, নির্মাণ কাঠামো এবং সম্ভাবনা দেখে গভীর আগ্রহের কথা জানান।
গতকাল বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপান স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শনে আসেন। তিনি এ সময় অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেন ও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অবগত হন। ভুটানের রাজা জানান, তার দেশ বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় একটি ইকোনমিক জোন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বৃহস্পতিবার তিনি কুড়িগ্রাম যাবেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত সোমবার ঢাকা পৌঁছান ভুটানের রাজা। সোমবার বিকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন এবং তাদের উপস্থিতিতে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং একটি চুক্তি নবায়ন হয়।
মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের সকালে রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভুটানের রাজাও সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিকেলে বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেন ভুটানের রাজা ও রানী।
বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।