Dhaka 7:08 pm, Monday, 23 December 2024

নড়াইলে পুলিশ সদস্যের ‘বিশেষ অঙ্গ’ কেটে দেয়া সেই ডলির বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইলের একটি আবাসিক হোটেলে পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলামকে (২৭) তারই তালাক প্রাপ্ত দ্বিতীয় স্ত্রী ডলি খাতুন বিশেষ অঙ্গে ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করার ঘটনায় পুলিশ সদস্যের পরিবার।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) নড়াইল সদর থানায় ইমদাদুলের বাবা ডলি খাতুনের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।

ইমদাদুল ইসলাম লোহাগড়া উপজেলার হামরোল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মো. বজলেয়ার রহমান মল্লিকের ছেলে। তিনি যশোর পুলিশ লাইন্সে নায়েক পদে কর্মরত আছেন।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে যশোরে কর্মরত থাকা অবস্থায় পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলামের পরিচয় হয় যশোর সদরের ডলি খাতুনের সঙ্গে। ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তাদের সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। পারিবারিক কলহের জেরে পরের বছর ২০২৩ এর ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদস্য তার দ্বিতীয় স্ত্রী ডলিকে তালাক দেন।

পরে ডলি ইমদাদুলের বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। ইমদাদুল ও পরবর্তীতে ডলির বিরুদ্ধে নড়াইলের আদালতে অভিযোগ করেন।

আরও জানা যায়, সোমবার (১০ জুন) যশোর আদালতে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ডলির করা মামলার হাজিরার দিনে আদালত চত্বরেই দুইজনের মধ্যে ৩ লাখ টাকার চুক্তিতে মামলা নিষ্পত্তির আলোচনা হয়। পরদিন মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে নিরিবিলি স্থানে কথা বলার জন্যেই তারা নড়াইল পৌর এলাকার আবাসিক হোটেলে প্রবেশ করে। সেখানেই সুযোগ বুঝে ডলি ধারালো চাকু দিয়ে ইমদাদুলের বিশেষ অঙ্গে আঘাত করে।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে নেয়া হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য ইমদাদুলের বাবা মো. বজলেয়ার রহমান মল্লিক বলেন, ‘আমার ছেলের অপারেশন হয়েছে। যতটুকু জানি তার (ইমদাদুল) অবস্থা এখন পর্যন্ত শঙ্কা মুক্ত নয়।’

মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য ছোটাছুটি করতে গিয়ে এবং কর্মস্থলের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনার অপেক্ষার জন্য মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।’

উল্লেখ্য, নড়াইলের পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুর ১টা ৪৮ মিনিটে কালো শার্ট পরিহিত পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলাম তার সাবেক স্ত্রীকে নিয়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় হোটেলে প্রবেশ করছেন।

ঐদিনই বিকেল ৫ টা ১১ মিনিটে ইমদাদুল অস্বাভাবিক অবস্থায় বিশেষ অঙ্গ চেপে ধরে হোটেলের সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নামছেন, তার পেছনে ডলি খাতুন ও তড়িঘড়ি করে নামছেন। পুলিশ সদস্য দৌড়ে হোটেলের বাহিরে এসে দাঁড়িয়ে ডলিকে চলে যেতে ইশারা করেন। হোটেলের বাহিরে দুজনকে স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় কথা বলতে দেখা যায়।

এর ঠিক এক মিনিট পর ইমদাদুল দৌড়ে আবার হোটেল রুমে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়েই আবার দৌড়ে হোটেল থেকে বের হয়ে যান।

ঘটনার দিন রাতেই অভিযুক্ত ডলি খাতুনকে যশোর পুলিশ আটক করে। তার দেয়া তথ্য মতে নড়াইল সদর থানা পুলিশ হোটেলের কক্ষ থেকে ইমদাদুলের শার্ট সহ বেশ কিছু আলামত জব্দ করে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

নড়াইলে পুলিশ সদস্যের ‘বিশেষ অঙ্গ’ কেটে দেয়া সেই ডলির বিরুদ্ধে মামলা

আপলোড সময় : 06:18:43 pm, Saturday, 15 June 2024

নড়াইলের একটি আবাসিক হোটেলে পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলামকে (২৭) তারই তালাক প্রাপ্ত দ্বিতীয় স্ত্রী ডলি খাতুন বিশেষ অঙ্গে ধারালো চাকু দিয়ে আঘাত করার ঘটনায় পুলিশ সদস্যের পরিবার।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) নড়াইল সদর থানায় ইমদাদুলের বাবা ডলি খাতুনের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।

ইমদাদুল ইসলাম লোহাগড়া উপজেলার হামরোল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মো. বজলেয়ার রহমান মল্লিকের ছেলে। তিনি যশোর পুলিশ লাইন্সে নায়েক পদে কর্মরত আছেন।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে যশোরে কর্মরত থাকা অবস্থায় পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলামের পরিচয় হয় যশোর সদরের ডলি খাতুনের সঙ্গে। ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তাদের সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। পারিবারিক কলহের জেরে পরের বছর ২০২৩ এর ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদস্য তার দ্বিতীয় স্ত্রী ডলিকে তালাক দেন।

পরে ডলি ইমদাদুলের বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। ইমদাদুল ও পরবর্তীতে ডলির বিরুদ্ধে নড়াইলের আদালতে অভিযোগ করেন।

আরও জানা যায়, সোমবার (১০ জুন) যশোর আদালতে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ডলির করা মামলার হাজিরার দিনে আদালত চত্বরেই দুইজনের মধ্যে ৩ লাখ টাকার চুক্তিতে মামলা নিষ্পত্তির আলোচনা হয়। পরদিন মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে নিরিবিলি স্থানে কথা বলার জন্যেই তারা নড়াইল পৌর এলাকার আবাসিক হোটেলে প্রবেশ করে। সেখানেই সুযোগ বুঝে ডলি ধারালো চাকু দিয়ে ইমদাদুলের বিশেষ অঙ্গে আঘাত করে।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে নেয়া হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য ইমদাদুলের বাবা মো. বজলেয়ার রহমান মল্লিক বলেন, ‘আমার ছেলের অপারেশন হয়েছে। যতটুকু জানি তার (ইমদাদুল) অবস্থা এখন পর্যন্ত শঙ্কা মুক্ত নয়।’

মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য ছোটাছুটি করতে গিয়ে এবং কর্মস্থলের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনার অপেক্ষার জন্য মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।’

উল্লেখ্য, নড়াইলের পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুর ১টা ৪৮ মিনিটে কালো শার্ট পরিহিত পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলাম তার সাবেক স্ত্রীকে নিয়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় হোটেলে প্রবেশ করছেন।

ঐদিনই বিকেল ৫ টা ১১ মিনিটে ইমদাদুল অস্বাভাবিক অবস্থায় বিশেষ অঙ্গ চেপে ধরে হোটেলের সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নামছেন, তার পেছনে ডলি খাতুন ও তড়িঘড়ি করে নামছেন। পুলিশ সদস্য দৌড়ে হোটেলের বাহিরে এসে দাঁড়িয়ে ডলিকে চলে যেতে ইশারা করেন। হোটেলের বাহিরে দুজনকে স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় কথা বলতে দেখা যায়।

এর ঠিক এক মিনিট পর ইমদাদুল দৌড়ে আবার হোটেল রুমে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়েই আবার দৌড়ে হোটেল থেকে বের হয়ে যান।

ঘটনার দিন রাতেই অভিযুক্ত ডলি খাতুনকে যশোর পুলিশ আটক করে। তার দেয়া তথ্য মতে নড়াইল সদর থানা পুলিশ হোটেলের কক্ষ থেকে ইমদাদুলের শার্ট সহ বেশ কিছু আলামত জব্দ করে।