Dhaka 10:15 pm, Saturday, 21 December 2024

কোটা সুবিধায় পণ্য আনতে ফের উদ্যোগ

রমজান সামনে রেখে ভারত থেকে আনা হবে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ ও ১ লাখ টন চিনি

রমজান সামনে রেখে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে সাতটি ভোগ্যপণ্য কোটা সুবিধায় আনার ব্যাপারে ফের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে কেবল চাহিদা অনুযায়ী প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি করা যাবে- এমন একটি সংশোধনের বিধান রেখে চুক্তির আগ্রহ দেখিয়েছে সরকার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ধরনের একটি প্রস্তাবও  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতকে দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী কোটা সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিবছরই কোটা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট পরিমাণ সাত ভোগ্য পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করবে ভারতের ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে প্রতিবছর চাহিদার বিষয়টি সংশোধনে ভারতের কিছুটা আপত্তি রয়েছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ  কোটা সুবিধায় ভারতের কাছে চাওয়া হয়েছে যে সাত ভোগপণ্য তার মধ্যে রয়েছে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টন চাল, ২৬ লাখ টন গম, ১০ লাখ টন চিনি, ৮ লাখ টন পেঁয়াজ, ৫০ হাজার টন আদা, ৭০ হাজার টন রসুন এবং ১ লাখ টন মসুর ডাল।

সাত ভোগ্যপণ্য কোটা সুবিধায় আমদানির বিষয়টি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। এলক্ষ্যে ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশটির সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা ও একাধিক বৈঠক করেছেন দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেসব বৈঠকে বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য সাত ভোগ্যপণ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষকদের পণ্যের ন্যায্যদাম নিশ্চিত করার বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতিবছরই যাতে বাংলাদেশ কোটা সুবিধার আওতায় সুনির্দিষ্ট পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি করে সে বিষয়টির ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ এ ব্যাপারে আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে কোটা সুবিধা সংক্রান্ত চুক্তি যেটি হবে-সেটি যাতে প্রতিবছরই সংশোধন (রিভাইসড) করা যায় সে বিষয়টির ওপর তাগিদ দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা রয়েছে সত্য, তবে প্রতিবছর চাহিদার পরিমাণ এক নয়।

চাল ও পেঁয়াজ উৎপাদনে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশে আমদানি মূল্য কম হলে সেখান থেকে আমদানির সুযোগ নিতে পারেন ব্যবসায়ীরা। ফলে সাত ভোগ্যপণ্যের চাহিদা সব সময় এক রকম নাও থাকতে পারে। এ অবস্থায় কোটা সুবিধার আওতায় যে চুক্তিটি করা হবে সেটি প্রতিবছর সংশোধন যোগ্য হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, কোটা সুবিধায় সাত ভোগ্যপণ্য আমদানির বিষয়টি নতুন নয়। এ নিয়ে অনেক দূর কাজও হয়েছে। ভারত কোটা সুবিধার আওতায় পণ্য রপ্তানির ব্যাপারে আন্তরিক এবং তারা একটি স্থায়ী চুক্তি চাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিক কমিশনের (বিটিটিসি) পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, কোটা সুবিধার আওতায় ভোগ্যপণ্য আমদানির বিষয়টি সংশোধন যোগ্য হতে হবে। কারণ প্রতিবছর দেশের চাহিদা এক রকম নয়। বাংলাদেশে সব ধরনের ভোগ্যপণ্য উৎপাদন হয় এবং প্রতিবছর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি ভারতকে সরকারকে জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো তারা কেনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। উভয়পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আরও পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। তবে সম্প্রতি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানিয়েছেন, ভারত থেকে কোটা সুবিধায় ভোগ্যপণ্য আমদানির বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। রমজান সামনে রেখে দেশটি ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ এবং এক লাখ টন চিনি রপ্তানির আগ্রহ দেখিয়েছে। আশা করছি, বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী এ দুটি পণ্য রপ্তানি করবে ভারত। তিনি জানান, যেহেতু আমাদের ভোগ্যপণ্য আমদানি করতে হয় এবং এক্ষেত্রে ভারত একটি সুবিধাজনক বড় বাজার। তাই দেশটির সঙ্গে এ ব্যাপারে একটি চুক্তি বা সমঝোতা করা যেতে পারে। সেটি নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

কোটা সুবিধায় পণ্য আনতে ফের উদ্যোগ

আপলোড সময় : 09:57:42 pm, Saturday, 24 February 2024

রমজান সামনে রেখে ভারত থেকে আনা হবে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ ও ১ লাখ টন চিনি

রমজান সামনে রেখে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে সাতটি ভোগ্যপণ্য কোটা সুবিধায় আনার ব্যাপারে ফের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে কেবল চাহিদা অনুযায়ী প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি করা যাবে- এমন একটি সংশোধনের বিধান রেখে চুক্তির আগ্রহ দেখিয়েছে সরকার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ধরনের একটি প্রস্তাবও  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতকে দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী কোটা সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিবছরই কোটা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট পরিমাণ সাত ভোগ্য পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করবে ভারতের ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে প্রতিবছর চাহিদার বিষয়টি সংশোধনে ভারতের কিছুটা আপত্তি রয়েছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ  কোটা সুবিধায় ভারতের কাছে চাওয়া হয়েছে যে সাত ভোগপণ্য তার মধ্যে রয়েছে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টন চাল, ২৬ লাখ টন গম, ১০ লাখ টন চিনি, ৮ লাখ টন পেঁয়াজ, ৫০ হাজার টন আদা, ৭০ হাজার টন রসুন এবং ১ লাখ টন মসুর ডাল।

সাত ভোগ্যপণ্য কোটা সুবিধায় আমদানির বিষয়টি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। এলক্ষ্যে ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশটির সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা ও একাধিক বৈঠক করেছেন দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেসব বৈঠকে বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য সাত ভোগ্যপণ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষকদের পণ্যের ন্যায্যদাম নিশ্চিত করার বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতিবছরই যাতে বাংলাদেশ কোটা সুবিধার আওতায় সুনির্দিষ্ট পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি করে সে বিষয়টির ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ এ ব্যাপারে আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে কোটা সুবিধা সংক্রান্ত চুক্তি যেটি হবে-সেটি যাতে প্রতিবছরই সংশোধন (রিভাইসড) করা যায় সে বিষয়টির ওপর তাগিদ দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা রয়েছে সত্য, তবে প্রতিবছর চাহিদার পরিমাণ এক নয়।

চাল ও পেঁয়াজ উৎপাদনে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশে আমদানি মূল্য কম হলে সেখান থেকে আমদানির সুযোগ নিতে পারেন ব্যবসায়ীরা। ফলে সাত ভোগ্যপণ্যের চাহিদা সব সময় এক রকম নাও থাকতে পারে। এ অবস্থায় কোটা সুবিধার আওতায় যে চুক্তিটি করা হবে সেটি প্রতিবছর সংশোধন যোগ্য হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, কোটা সুবিধায় সাত ভোগ্যপণ্য আমদানির বিষয়টি নতুন নয়। এ নিয়ে অনেক দূর কাজও হয়েছে। ভারত কোটা সুবিধার আওতায় পণ্য রপ্তানির ব্যাপারে আন্তরিক এবং তারা একটি স্থায়ী চুক্তি চাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিক কমিশনের (বিটিটিসি) পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, কোটা সুবিধার আওতায় ভোগ্যপণ্য আমদানির বিষয়টি সংশোধন যোগ্য হতে হবে। কারণ প্রতিবছর দেশের চাহিদা এক রকম নয়। বাংলাদেশে সব ধরনের ভোগ্যপণ্য উৎপাদন হয় এবং প্রতিবছর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি ভারতকে সরকারকে জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো তারা কেনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। উভয়পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আরও পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। তবে সম্প্রতি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানিয়েছেন, ভারত থেকে কোটা সুবিধায় ভোগ্যপণ্য আমদানির বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। রমজান সামনে রেখে দেশটি ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ এবং এক লাখ টন চিনি রপ্তানির আগ্রহ দেখিয়েছে। আশা করছি, বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী এ দুটি পণ্য রপ্তানি করবে ভারত। তিনি জানান, যেহেতু আমাদের ভোগ্যপণ্য আমদানি করতে হয় এবং এক্ষেত্রে ভারত একটি সুবিধাজনক বড় বাজার। তাই দেশটির সঙ্গে এ ব্যাপারে একটি চুক্তি বা সমঝোতা করা যেতে পারে। সেটি নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।