কুমিল্লা সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার বড় মেয়ে অপসারিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাসসিন বাহার সূচনার বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুমিল্লার তালতলা চৌমুহনীতে ছাত্র-জনতার মিছিলে সশস্ত্র হামলা ও আহত করার ঘটনায় কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
বাহার ও সূচি ছাড়াও আরো ২২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত দেড় শত জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন কুমিল্লার দক্ষিণ চর্থা তাল তলার কাশেম মিয়ার ছেলে ছোটন মিয়া। কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই বিকাল সাড়ে তিনটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যে ছাত্র-জনতা মিছিল সহকারে কান্দিরপাড় মোড়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণ চর্থা তালতলা চৌমুহনী সৈয়দ বাড়ি সংলগ্ন পাকা রাস্তায় সমবেত হয়।
এসময় সাবেক এমপি বাহাউদ্দিন বাহার ও তাহসিন বাহার সূচনার হুকুমে আসামীরা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে নিরস্ত্র ছাত্রজনতার পর অতর্কিত হামলা করে। এতে বাদির ডান পায়ের হাঁটু উপরে গুলিবিদ্ধ হয় এবং কোপের আঘাতে গুরুতর জখম হয়। এ ছাড়া সাক্ষী রোমান হাসান, রিপন, সাবিক, ইসমাইল, কাজী সুমন, ইসমাইল হোসেন গুলিবিদ্ধ ও জখম এবং স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়।
মামলায় কুমিল্লা সাবেক এমপি বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে তাহসীন বাহার সূচনা ছাড়াও কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর ইসলাম টুটুল, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুর রহমান, কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান পিয়াস, সোনালি ব্যাংকের সাবেক সিবিএ নেতা হাসান খসরু, কাউন্সিলর হাবিবুল আল আমিন সাদী, সরকার মাহমুদ জাবেদ, মনজুর কাদের মনি, সৈয়দ রায়হান আবদুস সাত্তার, কাউসারা বেগম সূমি, আমড়াতলীর চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, কালিয়াজুড়ির মুরাদ মিয়া, কাউন্সিলর আজাদ হোসেন, কাউন্সিলার আনোয়ার হোসেন, কাউন্সিলর আবুল হাসান, কাউন্সিলর আবুল হাসেম, সাবেক কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মাসুদ, কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক শিহানু, আওয়ামীলীগ নেতা সালেহীন শায়ের, কুমিল্লার মধ্যম আশ্রাফপুরের নাজমুল ইসলাম শাওন, ছাত্রলীগ নেতা সালেহ আহম্মেদ রাসেল, কুমিল্লার অশোকতলার শাহ আলম খান,কাউন্সিলর কাজী গোলাম সরওয়ার শিপন, কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সোহেল, দক্ষিণ চর্থার কাউসার আহমেদ খন্দকারসহ ১৫০ জনকে আসামী করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ছাত্রজনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিদের এলোপাতাড়ি অস্ত্রের গুলি, রামদার কোপ, লাঠির আঘাতে বামদিকে ডান পায়ের হাটুর উপরে গুলিবিদ্ধ ও হাটুর নিচে একাধিক কোপের আঘাতে কাটা রক্তাক্ত গুরুতর জখম করা হয়।
এ ঘটনায় সাক্ষী রোমান হাসান এর বাম চোখে গুলির স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়, সাক্ষী মোঃ রিপন এর পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে পিছন দিক দিয়ে বের হয়ে যায়, সাক্ষী মোঃ সাকিব এর মুখে সহ সমস্ত শরীরের গুলির অসংখ্য ্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়, সাক্ষী মইল হোসেন এর ডান হাতে হাড় ভাঙ্গা জখম হয় এবং বাম পায়ে গুলির স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়, সাক্ষী কাজী সুমন এর ডানে হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়।
এছাড়াও আসামিদের এলোপাতাড়ি আঘাতের ফলে আমাদের আরো ছাত্রজনতা সাধারণ ফুলা, কাটা ও হাড়ভাঙ্গা গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়। ঘটনার সংবাদ পাইয়া স্থানীয় লোকজন উপস্থিত হইলে আসামীরা দ্রুত দিক-বেদিকে দৌড়িয়ে পালিয়ে যায়।