Dhaka 12:42 am, Monday, 23 December 2024

ওয়াহেদপুরে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক মানের পাঠাগার দেখে মন ছুঁয়ে গেলো

প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি স্কুলের পাশে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক মানের পাঠাগার দেখে যে কারও মন ছুঁয়ে যাবে,আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়বে। চারপাশে তাকে তাকে সাজানো বইয়ের সারি। নান্দনিকতায় ভরপুর এই স্থানটি হলো কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের ওয়াহেদপুর উত্তর বাজারে ওয়াহেদপুর ইফতেখার আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয় এর পাশে নুরনাহার পাঠাগার।

‘হিমালয়ের মাথার উপরে কঠিন বরফের মধ্যে যেমন কত কত বন্যা বাঁধা আছে, তেমনি এই *পাঠাগারের* মধ্যে মানব-হৃদয়ের বন্যা কে বাঁধিয়া রাখিয়াছে!’
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ উক্তিই বলে দেয় মানুষের জীবনে একটি **পাঠাগারের* প্রয়োজনীয়তার কথা। কিন্তু ডিজিটাল যুগে এসে পাঠচর্চা বা *পাঠাগারে* আসা-যাওয়া অনেকটাই থমকে গিয়েছে। নতুন প্রজন্ম বুঁদ হয়ে আছে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে। তবে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে সম্প্রতি *পাঠাগার* প্রতিষ্ঠা করে সাড়া জাগিয়েছেন ওয়াহেদপুরের ইফতেখার আহমেদ মাসুদ। মায়ের নামে গড়া পাঠাগারটি এখন আলোঁর দিশারি হয়ে উঠেছে। সেখানে নিয়মিত চলে পাঠচর্চা।

ইফতেখার আহমেদ মাসুদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী ও আয়কর আইনজীবী। নিজ গ্রামে পাঠগারটি গড়ে তুলেছেন। ২০২৪ সালের ২৯ নভেম্বর শুরু হয় পাঠাগারের যাত্রা। বর্তমানে পাঠাগারটি সপ্তাহের ছয় দিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শিশুসাহিত্য, রাজনীতি, বিভিন্ন লেখকের উপন্যাস, ভারতের প্রখ্যাত লেখকদের উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ধর্মীয় বই, বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী থেকে সব ধরনের বই শোভা পাচ্ছে পাঠাগারের শেলফে। রাখা হবে দৈনিক পত্রিকাও।

স্থানীয় বাসিন্দা এডভোকেট কাজী খোরশেদ জানান, এ এলাকায় আগে এত কোনো পাঠাগার ছিল না। পাঠাগার প্রতিষ্ঠার পর এলাকার মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে উঠছে। ধীরে ধীরে আলো ছড়াচ্ছে পাঠাগারটি। এবং ইফতেখার আহমেদ এই অঞ্চলের মানুষের জন্য মানবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ” ইফতেখার আহমেদ ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠা করেছেন।

পাঠাগারের *লাইব্রেরিম্যান* মোঃ আবুল কাশেম বলেন, মানুষের শরীরের জন্য যেমন খাদ্যের দরকার, তেমনি মনের খাদ্যও তার *প্রয়োজন।* এই প্রয়োজন মেটাতে পারে পাঠাগার। পাঠাগার মানুষের ক্লান্ত, বুভুক্ষু মনকে আনন্দ দেয়। তার জ্ঞান প্রসারে রুচিবোধ জাগ্রত করে। পাঠাগারটি বিকাশে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন।পাঠাগারটিতে বইও আছে যথেষ্ট পরিমাণ।মানুষকে বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলতে তারা উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।

পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ইফতেখার আহমেদ মাসুদ
জানান, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছি। নতুন প্রজন্ম যেন বইমুখী, উদার, নৈতিকতাসম্পন্ন মানবিক মানুষ হতে পারে, সমাজকে আলোকিত করতে পারে, সেই আশা থেকেই পাঠাগারের প্রতিষ্ঠা। পাঠাগারটি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ভালো চলছে। পাঠকের সংখ্যা ধীরে ধীরে অবশ্যই বাড়বে।
আশা করি আমার এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ দেখে অন্যরাও নিজ এলাকায় সামর্থ্য অনুযায়ী পাঠাগার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবেন যাতে নতুন প্রজন্ম বই পাঠে আগ্রহী হয়ে ওঠে। আমি অত্র অঞ্চলের মানবিক কার্য পরিচালনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন করেছি যা কিছু দিনের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করবে ইনশাআল্লাহ।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ওয়াহেদপুরে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক মানের পাঠাগার দেখে মন ছুঁয়ে গেলো

আপলোড সময় : 04:13:30 pm, Thursday, 5 December 2024

প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি স্কুলের পাশে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক মানের পাঠাগার দেখে যে কারও মন ছুঁয়ে যাবে,আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়বে। চারপাশে তাকে তাকে সাজানো বইয়ের সারি। নান্দনিকতায় ভরপুর এই স্থানটি হলো কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের ওয়াহেদপুর উত্তর বাজারে ওয়াহেদপুর ইফতেখার আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয় এর পাশে নুরনাহার পাঠাগার।

‘হিমালয়ের মাথার উপরে কঠিন বরফের মধ্যে যেমন কত কত বন্যা বাঁধা আছে, তেমনি এই *পাঠাগারের* মধ্যে মানব-হৃদয়ের বন্যা কে বাঁধিয়া রাখিয়াছে!’
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ উক্তিই বলে দেয় মানুষের জীবনে একটি **পাঠাগারের* প্রয়োজনীয়তার কথা। কিন্তু ডিজিটাল যুগে এসে পাঠচর্চা বা *পাঠাগারে* আসা-যাওয়া অনেকটাই থমকে গিয়েছে। নতুন প্রজন্ম বুঁদ হয়ে আছে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে। তবে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে সম্প্রতি *পাঠাগার* প্রতিষ্ঠা করে সাড়া জাগিয়েছেন ওয়াহেদপুরের ইফতেখার আহমেদ মাসুদ। মায়ের নামে গড়া পাঠাগারটি এখন আলোঁর দিশারি হয়ে উঠেছে। সেখানে নিয়মিত চলে পাঠচর্চা।

ইফতেখার আহমেদ মাসুদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী ও আয়কর আইনজীবী। নিজ গ্রামে পাঠগারটি গড়ে তুলেছেন। ২০২৪ সালের ২৯ নভেম্বর শুরু হয় পাঠাগারের যাত্রা। বর্তমানে পাঠাগারটি সপ্তাহের ছয় দিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শিশুসাহিত্য, রাজনীতি, বিভিন্ন লেখকের উপন্যাস, ভারতের প্রখ্যাত লেখকদের উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ধর্মীয় বই, বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী থেকে সব ধরনের বই শোভা পাচ্ছে পাঠাগারের শেলফে। রাখা হবে দৈনিক পত্রিকাও।

স্থানীয় বাসিন্দা এডভোকেট কাজী খোরশেদ জানান, এ এলাকায় আগে এত কোনো পাঠাগার ছিল না। পাঠাগার প্রতিষ্ঠার পর এলাকার মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে উঠছে। ধীরে ধীরে আলো ছড়াচ্ছে পাঠাগারটি। এবং ইফতেখার আহমেদ এই অঞ্চলের মানুষের জন্য মানবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ” ইফতেখার আহমেদ ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠা করেছেন।

পাঠাগারের *লাইব্রেরিম্যান* মোঃ আবুল কাশেম বলেন, মানুষের শরীরের জন্য যেমন খাদ্যের দরকার, তেমনি মনের খাদ্যও তার *প্রয়োজন।* এই প্রয়োজন মেটাতে পারে পাঠাগার। পাঠাগার মানুষের ক্লান্ত, বুভুক্ষু মনকে আনন্দ দেয়। তার জ্ঞান প্রসারে রুচিবোধ জাগ্রত করে। পাঠাগারটি বিকাশে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন।পাঠাগারটিতে বইও আছে যথেষ্ট পরিমাণ।মানুষকে বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলতে তারা উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।

পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ইফতেখার আহমেদ মাসুদ
জানান, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছি। নতুন প্রজন্ম যেন বইমুখী, উদার, নৈতিকতাসম্পন্ন মানবিক মানুষ হতে পারে, সমাজকে আলোকিত করতে পারে, সেই আশা থেকেই পাঠাগারের প্রতিষ্ঠা। পাঠাগারটি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ভালো চলছে। পাঠকের সংখ্যা ধীরে ধীরে অবশ্যই বাড়বে।
আশা করি আমার এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ দেখে অন্যরাও নিজ এলাকায় সামর্থ্য অনুযায়ী পাঠাগার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবেন যাতে নতুন প্রজন্ম বই পাঠে আগ্রহী হয়ে ওঠে। আমি অত্র অঞ্চলের মানবিক কার্য পরিচালনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন করেছি যা কিছু দিনের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করবে ইনশাআল্লাহ।