Dhaka 4:50 pm, Saturday, 21 December 2024
বেকিং নিউজ :

একীভূত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৬ ব্যাংক

একীভূত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৬ ব্যাংক। এরই মধ্যে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে এবার উচ্চ খেলাপি ঋণের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) দ্রুতসময়ের মধ্যে একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা শেষ হয়েছে।

বুধবার (৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে আলাদা সভা করে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

এর আগে বেসরকারি খাতের শরিয়াভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে নাজুক পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ দুই ব্যাংকের আদলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দ্রুতসময়ে চার ব্যাংক সমঝোতা স্মারক সই হবে।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পলিসি অ্যাডভাইজর ও সদ্য বিদায়ী ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের এবং সরকারি চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। আনুষ্ঠানিকতার জন্য এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় বেসিক ব্যাংকও একীভূত হচ্ছে। ব্যাংকটি নিয়ে আলোচনা রয়েছে। রাষ্ট্রীয় অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে বেসিককে এক করা হতে পারে। সরকারি ৬ ব্যাংক ও পদ্মা ছাড়াও বেসরকারি আরও আটটি ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনা রয়েছে। এভাবে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে ৬১ থেকে ৫০ বা এর নিচে নামানো হবে।

 

আমানতকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যাংক একীভূতকরণের মাধ্যমে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকের দায় ও সম্পদ মিলিয়ে দেওয়া হবে। ভালো ব্যাংক যেন চাপে না পড়ে, সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন বিষয়ে নীতি-সহায়তা দেবে। এতে খারাপ ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) এবং বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণে (এসএলআর) ছাড় দিতে পারে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের বিপরীতে সাধারণভাবে যে হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ করতে হয় সেখানেও শিথিল করা হবে। ভালো ব্যাংকে এসে গ্রাহকের যেন আমানত ফেরত নেওয়ার চাপ তৈরি না হয়, সে জন্যও একটি ব্যবস্থা রাখা হবে।

অন্যদিকে, একীভূত হওয়া ব্যাংকের মধ্যে দুর্বল ব্যাংকের পরিচালক আগামী ৫ বছর অন্য কোনো ব্যাংকে পরিচালক হতে পারবেন না। একই সঙ্গে চাকরি হারাবেন দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)।

 

 

আজ ব্যাংক একীভূতকরণ সংক্রান্ত নীতমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে দুর্বল (খারাপ অবস্থা) থাকা ব্যাংকগুলো নিজ থেকে একীভূত না হলে বাধ্যতামূলকভাবে একীভূত করা হবে। এর আগে দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা সই করতে হবে। এরপর আমানতকারী, পাওনাদার ও বিনিয়োগকারীর অর্থ ফেরতের পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বহিঃনিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের সার্বিক আর্থিক চিত্র বের করবে। সর্বশেষ আদালতের কাছে একীভূতকরণের আবেদন করতে হবে ব্যাংকে।

 

এতে কোনো ব্যাংক মূলধন ও তারল্য ঘাটতি, খেলাপি ঋণ, সুশাসনের ঘাটতি এবং আমানতকারীদের জন্য ক্ষতিকর কার্যকলাপের কারণে পিসিএ ফ্রেমওয়ার্কের আওতাভুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক পুনরুদ্ধারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিনিষেধ মানতে হবে। পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে আমানতকারীর স্বার্থে ব্যাংক বাধ্যতামূলক একীভূতকরণ হবে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শৃঙ্খল এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্যে ব্যাংকের অনুসরণের এ নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

একীভূত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৬ ব্যাংক

আপলোড সময় : 08:25:03 pm, Friday, 5 April 2024

একীভূত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৬ ব্যাংক। এরই মধ্যে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে এবার উচ্চ খেলাপি ঋণের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) দ্রুতসময়ের মধ্যে একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা শেষ হয়েছে।

বুধবার (৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে আলাদা সভা করে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

এর আগে বেসরকারি খাতের শরিয়াভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে নাজুক পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ দুই ব্যাংকের আদলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দ্রুতসময়ে চার ব্যাংক সমঝোতা স্মারক সই হবে।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পলিসি অ্যাডভাইজর ও সদ্য বিদায়ী ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের এবং সরকারি চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। আনুষ্ঠানিকতার জন্য এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় বেসিক ব্যাংকও একীভূত হচ্ছে। ব্যাংকটি নিয়ে আলোচনা রয়েছে। রাষ্ট্রীয় অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে বেসিককে এক করা হতে পারে। সরকারি ৬ ব্যাংক ও পদ্মা ছাড়াও বেসরকারি আরও আটটি ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনা রয়েছে। এভাবে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে ৬১ থেকে ৫০ বা এর নিচে নামানো হবে।

 

আমানতকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যাংক একীভূতকরণের মাধ্যমে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকের দায় ও সম্পদ মিলিয়ে দেওয়া হবে। ভালো ব্যাংক যেন চাপে না পড়ে, সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন বিষয়ে নীতি-সহায়তা দেবে। এতে খারাপ ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) এবং বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণে (এসএলআর) ছাড় দিতে পারে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের বিপরীতে সাধারণভাবে যে হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ করতে হয় সেখানেও শিথিল করা হবে। ভালো ব্যাংকে এসে গ্রাহকের যেন আমানত ফেরত নেওয়ার চাপ তৈরি না হয়, সে জন্যও একটি ব্যবস্থা রাখা হবে।

অন্যদিকে, একীভূত হওয়া ব্যাংকের মধ্যে দুর্বল ব্যাংকের পরিচালক আগামী ৫ বছর অন্য কোনো ব্যাংকে পরিচালক হতে পারবেন না। একই সঙ্গে চাকরি হারাবেন দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)।

 

 

আজ ব্যাংক একীভূতকরণ সংক্রান্ত নীতমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে দুর্বল (খারাপ অবস্থা) থাকা ব্যাংকগুলো নিজ থেকে একীভূত না হলে বাধ্যতামূলকভাবে একীভূত করা হবে। এর আগে দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা সই করতে হবে। এরপর আমানতকারী, পাওনাদার ও বিনিয়োগকারীর অর্থ ফেরতের পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বহিঃনিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের সার্বিক আর্থিক চিত্র বের করবে। সর্বশেষ আদালতের কাছে একীভূতকরণের আবেদন করতে হবে ব্যাংকে।

 

এতে কোনো ব্যাংক মূলধন ও তারল্য ঘাটতি, খেলাপি ঋণ, সুশাসনের ঘাটতি এবং আমানতকারীদের জন্য ক্ষতিকর কার্যকলাপের কারণে পিসিএ ফ্রেমওয়ার্কের আওতাভুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক পুনরুদ্ধারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিনিষেধ মানতে হবে। পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে আমানতকারীর স্বার্থে ব্যাংক বাধ্যতামূলক একীভূতকরণ হবে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শৃঙ্খল এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্যে ব্যাংকের অনুসরণের এ নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।