Dhaka 8:20 pm, Sunday, 22 December 2024

ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় হতে পারে

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশের অনুকূলে ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে আজ। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের ঋণের অর্থ ছাড় করার প্রস্তাবটির চূড়ান্ত অনুমোদন মিলতে পারে। এটি অনুমোদন হলে পরবর্তী এক-দুদিনের মধ্যে অর্থ ছাড় করা হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ওই অর্থ পেয়ে যাবে। তখন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়ে যাবে। সাময়িকভাবে কিছুটা উপশম হবে। বাজারে ডলারের প্রবাহ কিছুটা বাড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর সদর দপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় আজ রাত সাড়ে ৯টায়। প্রস্তাবটি ওই বৈঠকে অনুমোদন হতে পারে বলে আগেই জানিয়েছিল বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া আইএমএফ মিশন। ঋণের কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আইএমএফ-এর দেওয়া শর্ত বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের অগ্রগতি দেখতে ২৪ এপ্রিল সংস্থাটির একটি মিশন ঢাকায় আসে। তারা ৮ মে পর্যন্ত অবস্থান করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে। এতে তারা শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চায়। প্রতিনিধিদলটি ঢাকা ত্যাগের আগে এমন বার্তা দিয়ে যায়, শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে তারা খুশি। ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে তারা প্রতিবেদনে সুপারিশ করবেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, নির্বাহী পরিষদ ঋণের অর্থ ছাড়ের প্রস্তাবটি অনুমোদন করবে।

বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে মঙ্গল বা বুধবার ঋণের অর্থ পাওয়া যাবে। এবার তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের কারণে কিস্তির অর্থও বেড়েছে। এই অর্থ পেলে দেশের নিট রিজার্ভ আবার ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এর আগে একাধিকবার নিট রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমেছে।

এর আগে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের অনুকূলে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর মধ্যে দুটি কিস্তিতে ১১৬ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে। এখন তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১১৫ কোটি ডলার ছাড় করার পর্যায়ে রয়েছে।

ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে চলতি বছরের নভম্বরের শেষদিকে আরও একটি মিশন ঢাকায় আসতে পারে। ডিসেম্বরে ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় হওয়ার কথা রয়েছে।

শর্ত অনুযায়ী, প্রতি কিস্তির অর্থ ছাড় করার আগেই আইএমএফ তাদের দেওয়া শর্ত ও অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে।

ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের শর্ত বাস্তবায়ন করতে সুদের হার ও ডলারের দাম বাড়ানো হয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার কমাতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার পদ্ধতি সীমিত আকারে চালু করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে পণ্যমূল্য যেমন বাড়ছে, তেমনই ভোক্তার জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, যা ভোক্তার জন্য বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের মূল্যায়নের সময় চতুর্থ কিস্তির শর্ত হিসাবে আইএমএফ বলেছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করতে হবে। ঋণের সুদের হারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা যাবে না। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে। খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা আন্তর্জাতিক মানের করতে হবে। এতে বাজারে পণ্যমূল্য যেমন আরও বাড়বে, তেমনই ভোক্তার ওপর চাপ আরও বাড়বে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় হতে পারে

আপলোড সময় : 04:14:00 pm, Monday, 24 June 2024

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশের অনুকূলে ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে আজ। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের ঋণের অর্থ ছাড় করার প্রস্তাবটির চূড়ান্ত অনুমোদন মিলতে পারে। এটি অনুমোদন হলে পরবর্তী এক-দুদিনের মধ্যে অর্থ ছাড় করা হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ওই অর্থ পেয়ে যাবে। তখন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়ে যাবে। সাময়িকভাবে কিছুটা উপশম হবে। বাজারে ডলারের প্রবাহ কিছুটা বাড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর সদর দপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় আজ রাত সাড়ে ৯টায়। প্রস্তাবটি ওই বৈঠকে অনুমোদন হতে পারে বলে আগেই জানিয়েছিল বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া আইএমএফ মিশন। ঋণের কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আইএমএফ-এর দেওয়া শর্ত বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের অগ্রগতি দেখতে ২৪ এপ্রিল সংস্থাটির একটি মিশন ঢাকায় আসে। তারা ৮ মে পর্যন্ত অবস্থান করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে। এতে তারা শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চায়। প্রতিনিধিদলটি ঢাকা ত্যাগের আগে এমন বার্তা দিয়ে যায়, শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে তারা খুশি। ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে তারা প্রতিবেদনে সুপারিশ করবেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, নির্বাহী পরিষদ ঋণের অর্থ ছাড়ের প্রস্তাবটি অনুমোদন করবে।

বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে মঙ্গল বা বুধবার ঋণের অর্থ পাওয়া যাবে। এবার তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের কারণে কিস্তির অর্থও বেড়েছে। এই অর্থ পেলে দেশের নিট রিজার্ভ আবার ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এর আগে একাধিকবার নিট রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমেছে।

এর আগে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের অনুকূলে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর মধ্যে দুটি কিস্তিতে ১১৬ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে। এখন তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১১৫ কোটি ডলার ছাড় করার পর্যায়ে রয়েছে।

ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে চলতি বছরের নভম্বরের শেষদিকে আরও একটি মিশন ঢাকায় আসতে পারে। ডিসেম্বরে ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় হওয়ার কথা রয়েছে।

শর্ত অনুযায়ী, প্রতি কিস্তির অর্থ ছাড় করার আগেই আইএমএফ তাদের দেওয়া শর্ত ও অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে।

ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের শর্ত বাস্তবায়ন করতে সুদের হার ও ডলারের দাম বাড়ানো হয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার কমাতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার পদ্ধতি সীমিত আকারে চালু করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে পণ্যমূল্য যেমন বাড়ছে, তেমনই ভোক্তার জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, যা ভোক্তার জন্য বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের মূল্যায়নের সময় চতুর্থ কিস্তির শর্ত হিসাবে আইএমএফ বলেছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করতে হবে। ঋণের সুদের হারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা যাবে না। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে। খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা আন্তর্জাতিক মানের করতে হবে। এতে বাজারে পণ্যমূল্য যেমন আরও বাড়বে, তেমনই ভোক্তার ওপর চাপ আরও বাড়বে।